গৌতম ভট্টাচার্য: টুম্পা সোনা থেকে সারদা কেলেঙ্কারি, নন্দীগ্রাম (Nandigram) থেকে রিজ কাণ্ড, বিধানসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটের (west Bengal assembly election 2021) আগে সংবাদ প্রতিদিনের ফেসবুক লাইভে কোনও বল সোজা ব্যাটে খেললেন আবার বাউন্সার সুকৌশলে এড়িয়ে গেলেন চণ্ডীতলার সিপিএম (CPM) প্রার্থী মহম্মদ সেলিম Md Selim)। দুই প্রতিপক্ষ তৃণমূল (TMC), বিজেপিকে (BJP) কার্যত একাসনে বসিয়ে আক্রমণও করলেন। সেলিমর দাবি, যাঁরা স্টেনগান, মেশিনগান নিয়ে ভোট করতে চেয়েছিল, তাঁদের এখন টুম্পা সোনা গান শুনতে হচ্ছে। বামেরাই আবার বাংলার ভোট সংস্কৃতিতে শৈল্পিক দেওয়াল লিখন, কার্টুন, ওয়াল গ্রাফিটি ফিরিয়ে এনেছে। আর এক ঝাঁক নতুন প্রজন্মকে দেখে কেউ আর বামেদের উপেক্ষা করতে পারছেন না।
এই ভোটে সংযুক্ত মোর্চাকে তৃণমূল, বিজেপির মতো শক্তির বিরুদ্ধে একযোগে লড়তে হচ্ছে। তবে দুই দলই যে এক, তা বোঝাতে চেয়েছেন সেলিম। সেলিমের দাবি, তৃণমূলকে ব্যবহার করেই রাজ্যে আরএসএস ধীরে ধীর বেড়েছে। তৃণমূলের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে জঙ্গলমহল তথা রাজ্যে আরএসএস বাড়ছে, তা নিয়ে তাঁরা আগেই সতর্ক করেছিলেন। আর ভোটের আগে তৃণমূল, বিজেপি এখন লোক দেখানো লড়াই করছে। কারণ এক দিকে ভূবনেশ্বরে অমিত সাহের সঙ্গে মধ্য়াহ্ন ভোজন করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আবার রাজ্যে এসে লড়াই দেখাচ্ছেন। বিজেপি আর তৃণমূল এক জনের লিখে দেওয়া চিত্রনাট্যে অভিনয় করছে। যদিও সেই অভিনয় ভাল হচ্ছে না। মানুষ ধরে ফেলেছেন বলেও কটাক্ষ করেন সেলিম। গত ১০ বছরে নাকি তৃণমূল-বিজেপি এমন ভাবে মিলে গিয়েছে, মানুষই বিজেমূল নাম দিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত করুন’, সিতাইয়ের সভায় গেরুয়া শিবিরকে তোপ অভিষেকের]
যে কংগ্রেসের (Congress) বিরুদ্ধে এত দিন বামেদের লড়াই করতে দেখা গিয়েছে, তাদের সঙ্গেই আবার জোট করতে হচ্ছে কেন? জোট হওয়ার পর বামেদের বার বার এই প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। উত্তরে সেলিমের দাবি বামেরা বরাবর রাজ্যের দাবি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছে। কেন্দ্রের নীতি, যেমন ক্রেডিট-ডিপোজিট রেসিও নিয়ে লড়াই করেছে রাজ্যের বাম সরকার। দাবি আদায়ের এই লড়াই ভবিষ্যতেও জারি থাকবে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনও এই সব কথা বলেননি। এমনকি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় তালিকা দিতে পারবেন না, যে কোন কোন প্রোজেক্ট জমা দিয়েছেন আর কেন্দ্র অনুমতি দেয়নি। তালিকা দিলে বামেরাও সেই দাবি আদায়ে লড়াই করবে বলে দাবি সেলিমের। সংযুক্ত মোর্চার আর এক শরিক আব্বাস সিদ্দিকির ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোটে যেতে তাঁদের অসুবিধা হয়নি তাও খোলসা করেন।
শুধু রাজ্য বা কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমণ করাই নয়, রাজ্যে ক্ষমতায় এলে, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, শিল্পায়নের মতো বিষয়গুলিতেই যে তাঁরা জোর দেবেন তা জানিয়েছেন মহম্মদ সেলিম। আর শিল্প করতে গেলে যে ঝুঁকি রয়েছে, তাও নিতে রাজি বামেরা। আর ক্ষমতায় এলে নবান্ন থেকে যে মহাকরণে ফের সরিয়ে আনা হবে রাজ্যের প্রশাসনিক দফতর তাও জানিয়ে দেন সেলিম।