সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোটে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বার সরকারে তৃণমূল। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার শপথগ্রহণ করে নিজের কাজও শুরু করে দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নির্বাচিত বিধায়কদের শপথ হয়ে গিয়েছে। এবার পালা তৃতীয় মমতা সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের। ৯ তারিখ মন্ত্রীদের শপথ নেওয়ার কথা। তার আগে সম্ভাব্য মন্ত্রিসভা নিয়ে জোর চর্চা চলছে রাজনৈতিক মহলে। এই অবস্থায় অর্থদপ্তর নিয়ে আলোচনা সবচেয়ে বেশি। প্রথমে শোনা গিয়েছিল, গুরুত্বপূর্ণ এই দপ্তর নিজের হাতেই রাখবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে পরবর্তীতে সেই সিদ্ধান্ত পালটানো হয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর। আর এই দপ্তরের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ফের ভরসা রাখতে চান পুরনো সেনাপতি অমিত মিত্রের (Amit Mitra) উপরই। তাই ভোটে লড়াই না করলেও অমিত মিত্র ফের রাজ্যের কোষাগার সামলানোর দায়িত্ব পেতে পারেন, এই জল্পনা জোরাল হচ্ছে।
২০১১ সাল থেকে রাজ্যের অন্যতম সফল অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। তার আগে তিনি কেন্দ্রীয় স্তরে শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থা ফিকির (FICCI) চেয়ারম্যান পদে ছিলেন। অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলেছেন সেখানে। এরপর সরাসরি সংসদীয় রাজনীতিতে এসে খড়দহ কেন্দ্র থেকে বিধানসভা ভোটে জিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের অর্থমন্ত্রী হন অমিত মিত্র। ২০১৬ সালেও নির্বাচনে জয়ের পরও সেই একই দপ্তরের দায়িত্ব তাঁর হাতে ন্যস্ত হয়। কেন্দ্রের কাছে রাজ্যের দেনাপাওনা নিয়ে দরবার, কিংবা নীতি আয়োগের অভিজ্ঞ সদস্য হিসেবে পরামর্শ দান অথবা ঘাটতির মধ্যেও মধ্যবিত্তের সুবিধা-অসুবিধাকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট পেশ, গত ১০ বছর ধরে যথেষ্ট বিচক্ষণতার সঙ্গে কাজ করে এসেছেন অমিত মিত্র।
[আরও পডুন: মেদিনীপুরের অধিকারী ‘বুথে’ও ধাক্কা, তৃণমূলের চেয়ে অনেক পিছিয়ে বিজেপি]
তবে একুশের ভোটে দাঁড়াননি অমিত মিত্র। শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনী লড়াই থেকে অব্যাহতি নিয়েছিলেন। তাঁর বদলে খড়দহে অমিত মিত্রর কেন্দ্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সৈনিক হিসেবে এগিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় জনপ্রিয় নেতা কাজল সিনহাকে। অবশ্য ভোটের পরদিনই কোভিড আক্রান্ত কাজল সিনহার মৃত্যু হয়। রবিবারের ফলাফলে দেখা যায়, কাজল সিনহা বিপুল ভোটে খড়দহ থেকে জিতেছেন। ফলে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হবে। তবে কি ফের পুরনো কেন্দ্রেই লড়বেন অমিত মিত্র? কারণ, তিনি অর্থমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলে ৬ মাসের মধ্যে কোনও এক কেন্দ্র থেকে জিতে আসতে হবে তাঁকে। সেক্ষেত্রে চেনা যুদ্ধক্ষেত্র থেকেই হয়ত ফের লড়বেন তিনি।
[আরও পডুন: শীতলকুচি কাণ্ডের জের! সাসপেন্ড কোচবিহারের পুলিশ সুপার]
সূত্রের আরও খবর, স্বরাষ্ট্র, পুলিশ, স্বাস্থ্য-সহ একাধিক দপ্তর আগেরবারের মতো এবারও নিজের হাতে রাখতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিবহণের দায়িত্বে ফেরানো হতে পারে মদন মিত্রকে। তারকা বিধায়কদের কাঁধে বিভিন্ন দপ্তরের দায়িত্ব পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে রাজ চক্রবর্তী, অদিতি মুন্সিকে রাজ্য মন্ত্রিসভায় দেখা যেতে পারে। এছাড়া ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী যাঁরা ছিলেন, তাঁদের হাতেই থাকতে পারে সেই দপ্তর। তবে সবটাই বোঝা যাবে ৯ তারিখের পর।