সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফোনে আড়ি পাতা ইস্যুতে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এম বি লোকুরের নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিশন তৈরি করেছিল রাজ্য সরকার। যাকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা হয়। এবার সেই মামলাতেই হলফনামা জমা দিল রাজ্য। নিরপেক্ষভাবে পেগাসাস (Pegasus Row) ইস্যু খতিয়ে দেখতেই তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে বলে শীর্ষ আদালতে স্বপক্ষে যুক্তি দিল তারা।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বেঞ্চ নোটিস ধরায় রাজ্যকে। হলফনামায় রাজ্য জানায়, পেগাসাস কাণ্ডের সঙ্গে বাংলার মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে আছে। তাঁদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে এবং বিদেশি কোনও স্পাইওয়্যার যাতে ফোনে আড়ি পাততে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই কমিশন গঠন করা হয়েছে। তাই রাজ্যের গঠিত কমিটিই এই কাণ্ডের তদন্ত করুক। সেটাই তারা চায়। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের অভিযোগ, জনস্বার্থ মামলাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে RSS যোগ রয়েছে।
[আরও পড়ুন: Maharashtra: ‘কড়া জবাব দেওয়া হবে’, নারায়ণ রানে জামিন পেতেই বিজেপিকে হুমকি ছেলে নীতেশের]
পেগাসাস তদন্তের জন্য রাজ্যের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্তকে বেআইনি দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে একটি মামলা দায়ের হয়েছিল। মামলাকারীদের বক্তব্য, সর্বভারতীয় স্তরে এই মামলাটি আদালতের বিচারাধীন। তাছাড়া এটি কেন্দ্রীয় বিষয়। রাজ্য সরকারের পৃথক তদন্ত আইনসম্মত নয়। শীর্ষ আদালতে এই মামলাটির শুনানি ছিল আজ। আগেই রাজ্য এবং কেন্দ্র- দুই সরকারকেই নোটিস পাঠায় প্রধান বিচারপতি এন ভি রামানার (NV Ramana) নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ। যদিও তদন্ত কমিটির কাজে স্থগিতাদেশ দেয়নি সুপ্রিম কোর্ট। আদালতের বক্তব্য ওই কমিটি এই মুহূর্তে তদন্তের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। তাই স্থগিতাদেশ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে দাগেন।
প্রসঙ্গত, পেগাসাস ইস্যুতে শুরু থেকেই সরব এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের মঞ্চ থেকেই তিনি ঘোষণা করেন, ফোনে আড়ি পাতা কাণ্ডে আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করবে রাজ্য সরকার। দিল্লিতে গিয়ে সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে বৈঠকের পরও পেগাসাস নিয়ে সুর চড়ান তিনি। গত ২৬ জুলাই এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন লোকুর (Madan Lokur) এবং কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ওই কমিটি ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিজেদের কাজ শুরু করেছে। এবার রাজ্যের হলফনামা জমার পর জল কোন দিকে গড়ায়, সেটাই দেখার।