দীপঙ্কর মণ্ডল: রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য পদ থেকে রাজ্যপালকে অপসারণ করতে বিল এনেছে রাজ্য সরকার। এবার আচার্য পদে রাজ্যপালের পদে বসবেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার বিলগুলি নিয়ে প্রথমবার মুখ খুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় (WB Governor Jagdeep Dhankhar) । রাজভবনে দাঁড়িয়ে জানালেন, “নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। আমি খুব মন দিয়ে বিলগুলো দেখব। পক্ষপাতিত্ব করব না। গ্রহণযোগ্য হলে গ্রহণ করব। নাহলে রাজ্য সরকারের সঙ্গে কথা বলব।”
মঙ্গলবার বিধানসভায় স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য বদলের বিল (Chancellor Bill) পাশ হয়। প্রতিবাদে বিরোধী দল বিজেপির বিধায়করা রাজভবনে অভিযোগ জানান। তাঁদের পাশে নিয়ে রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন ধনকড়। একদিকে যেমন পয়গম্বর বিতর্ক কিংবা অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরুদ্ধে রাজ্যে চলতে থাকা অশান্তি নিয়ে সরব হয়েছেন তিনি, তেমনই আবার আচার্য বিলের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখ খুলেছেন।
[আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি: মানিক ভট্টাচার্য ও তাঁর পরিবারের সম্পত্তির খতিয়ান চাইল আদালত]
হিংসা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যপাল বলেন, “হিংসা সমস্যার সমাধান করতে পারে না। গণতন্ত্রে হিংসার জায়গা নেই।” টেনে আনেন ভোট পরবর্তী হিংসার প্রসঙ্গও। রাজ্যকে বিঁধে ধনকড়ের তোপ, “আমাদের রাজ্যে ভোটের পরে হিংসা হয়। সরকার ব্যবস্থা নেয় না। পুলিশ প্রশাসনের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। কী করে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হয়? পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্র তলানিতে ঠেকেছে।” সরব হন নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও। ধনকড়ের কথায়, “লক্ষ-লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি নিয়ে ছেলেখেলা হয়েছে। উঁচুস্তর পর্যন্ত দুর্নীতিতে জড়িত। যুব সম্প্রদায়কে চাকরি না দিয়ে যারা পরীক্ষায় বসেনি তাদের দেওয়া হয়েছে চাকরি।”
এর পরই ধনকড়ের দাবি, “নজর ঘোরানোর চেষ্টা হচ্ছে। বলছে, রাজ্যপালকে সরাতে হবে। কে আচার্য হবে প্রশ্ন উঠেছে।” মনে করিয়ে দিয়েছেন, শিক্ষা যুগ্ম তালিকায় রয়েছে। আচার্য বিল নিয়ে রাজ্যপাল বলেন, “আমি খুব মন দিয়ে বিলগুলো দেখব। পক্ষপাতিত্ব করব না। যদি গ্রহণযোগ্য হয়, গ্রহণ করব। যদি তা না হয়, আমি সরকারের সঙ্গে কথা বলব। গণতন্ত্রকে জলাঞ্জলি দেব না।” তাঁর কথায়, “জাতীয় শিক্ষানীতি গ্রহণ না করা মানে শিক্ষার ভবিষ্যৎ নষ্ট করা।” এরপরই রাজ্যের উদ্দেশে রাজ্যপাল বলেন, “আমি সরকারের বন্ধু হতে চাই, একটাই শর্ত, গণতন্ত্রের পথে চলতে হবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আমি নই, মুখ্যমন্ত্রীও নন।”
উল্লেখ্য, এদিকে নিয়ম মেনে বিল পাঠানো হবে রাজ্যপালের কাছে। কিন্তু তিনি যে সেখানে স্বাক্ষর করবেন না, তা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে ফের বিধানসভায় ফেরত আসতে পারে বিল। তার পর তা আরও একবার রাজ্যপালের কাছেই যাবে। যেহেতু সংবিধানের যুগ্মতালিকায় রয়েছে শিক্ষা, তাই বিলটি কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারেন তিনি।