ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: শিক্ষাদপ্তরে বেশি নিয়োগ দিতেই রাজ্য সরকার আদালতের কাছে দু’টি ফর্মুলা দিয়েছে। কোন ফর্মুলা গ্রহণযোগ্য তা জানিয়ে দেবে আদালতই। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদের তরফে বিকৃত প্রচার হওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের। এ কথা জানিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। যাদের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক রয়েছে তাদের রাখতেই হবে এমন কোনও মন্তব্য বা বক্তব্য কখনওই রাজ্য সরকারের তরফে করা হয়নি বলে এদিন স্পষ্ট জানান তৃণমূল মুখপাত্র।
তিনি বলেন,”আন্দোলনকারীরাই দাবি করেছিলেন শিক্ষক নিয়োগের জন্য নতুন পদ তৈরি করার। সেই দাবিকে মান্যতা দিয়ে রাজ্য সরকার দু’টি মডেল আদালতের কাছে জমা দিয়েছে। আন্দোলনকারীদের দাবি ও সমস্যার সমাধান করতে এবার আদালত যেটি গ্রহণ করবে সেটিকেই বাস্তবায়িত করবে সরকার। কারণ এই সংক্রান্ত নির্দেশ আদালত না দিলে পরে ফের মামলা হতে পারে। কিন্তু দেখতে হবে কোন মডেলে বেশি সংখ্যায় আন্দোলনকারীদের চাকরির সুযোগ হচ্ছে।” বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিএমের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে, যাঁদের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক বা প্রশ্ন আছে, তাঁদের রাখতেই নাকি রাজ্য সরকার শূন্যপদ তৈরি করেছে। বিষয়টি যে সম্পূর্ণ ভুল তা এদিন স্পষ্ট করে দেন তৃণমূল মুখপাত্র। বলেন, “আগের শিক্ষামন্ত্রীর নাম ও সিদ্ধান্ত নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু ২০২১-এ তো নতুন শিক্ষামন্ত্রী এসেছেন। তিনি নানাভাবে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য শুনে সরকারের তরফে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন।”
[আরও পড়ুন: ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকা এখনই প্রকাশ নয়, নির্দেশ সংশোধন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
সরকারের তরফে আদালতে পাঠানো মডেল দু’টি হল, – এক, যাঁদের নিয়ে বিতর্ক তাঁদের রেখে দিয়ে অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করে আন্দোলনকারীদের বেশি সংখ্যায় নিয়োগ করা। এক্ষেত্রে, আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকেই বেশ কয়েক হাজার নিয়োগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু বিতর্কিতদের রেখে দিয়ে নিয়োগ হচ্ছে তাই আর নতুন করে চাকরি খোয়ানো শিক্ষকদের তরফে মামলার সম্ভাবনা থাকছে না। দুই. এই প্রস্তাব অনুযায়ী, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে শুধুমাত্র তাঁদেরই শূন্যপদে আন্দোলনকারীদের মধ্যে থেকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ করা। এক্ষেত্রে যে ক’জনের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক আছে, শুধুমাত্র সেই কয়েকটি শূন্যপদে নিয়োগ হবে। এই সিদ্ধান্তও আদালতকেই নিতে হবে।
বিরোধীরা বিকৃত প্রচার করছে, এই অভিযোগ করে এদিন তৃণমূল মুখপাত্র দাবি করেন, “প্রথম প্রস্তাবে বেশি সংখ্যায় নিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এই সংখ্যাটি বেশ কয়েক হাজার হতে পারে। শুধু তাই নয়, চাকরি খোয়ানো শিক্ষকদের তরফে আদালতে গিয়ে ‘স্টে’ নিয়ে আসার ঝুঁকিও থাকছে না। কিন্তু দ্বিতীয় প্রস্তাবে শুধুমাত্র বিতর্কিতদের পদেই নিয়োগ হবে, তাও মেধার ভিত্তিতে। এই সংখ্যাটি ধরা যাক, ৫০০ বা ৭০০। কিন্তু গোটা সিদ্ধান্তই আদালতের উপর নির্ভর করছে।” কুণাল ঘোষ স্পষ্টই বলেন, “বিরোধীদের বিকৃত প্রচারে ক্ষতি হচ্ছে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদেরই। কারণ একটি প্রস্তাবে বেশ কয়েক হাজার, অন্যটিতে কয়েকশো।”