সুদীপ রায়চৌধুরী: আরও তুঙ্গে রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত। এবার রাজ্যের সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে দুর্নীতি ও হিংসার অভিযোগ সি ভি আনন্দ বোসের। রাজনৈতিক উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেই অভিযোগ। আর ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিলেন রাজ্যপাল।
আদৌ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো শিক্ষাক্ষেত্রে হিংসা কিংবা দুর্নীতি হচ্ছে কিনা। অথবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে সত্যিই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে রাজভবনের তরফে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে নেতৃত্ব দেবেন সুপ্রিম কোর্ট কিংবা হাই কোর্টের কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি।
[আরও পড়ুন: খণ্ডিত দেহ সাইকেলে দুদফায় পাচার! বাড়িতেই যৌন নির্যাতনের শিকার বধূ? ওয়াটগঞ্জ কাণ্ডে নয়া তথ্য]
প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক যে মোটেও ভালো ছিল না, তা কারও অজানা নয়। তবে প্রথম দিকে বর্তমান রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক বেশ মধুর ছিল। যদিও সময় যত গড়ায়, সম্পর্ক ততই খারাপ হতে থাকে। সম্প্রতি গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য অপসারণ নিয়ে সংঘাত সামনে আসে। আর সেই সংঘাতের মাঝে গত বুধবার রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। নিয়ম বহির্ভূতভাবে উচ্চশিক্ষা দপ্তরের নির্দেশে যে উপাচার্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ বন্ধ রেখেছেন তাঁদের সতর্ক করা হয়।
আর তার পরদিনই অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সকালে X হ্যান্ডেলে রাজভবনের তরফে একটি পোস্ট করা হয়। তাতে দাবি করা হয়, রাজ্যপাল ও নবান্নে সম্পর্কের অবনতিতে দায়ী একমাত্র শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সংবাদসংস্থা পিটিআই ওই পোস্টটি উদ্ধৃত করে। পরে অবশ্য সেই পোস্ট ডিলিট করে দেওয়া হয়। বিকেলে তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গ ওঠে। X হ্যান্ডেলে করা ওই পোস্ট রাজভবনের তরফে ডিলিট করা হয়েছে বলেই দাবি করেন খোদ ব্রাত্য বসু। তবে তার কিছুক্ষণের মধ্যে ব্রাত্য বসুকে সরানোর সুপারিশ করে রাজভবন। নবান্নে এই মর্মে সুপারিশপত্র পাঠানো হয়। রাজ্যপালের এই সুপারিশকে হাস্যকর বলে দাবি করেন ব্রাত্য। X হ্যান্ডেলে ক্ষোভপ্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যপাল সাংবিধানিক পদের অপব্যবহার করেছেন বলেই দাবি ব্রাত্যর। এই সংঘাতের মাঝে রাজ্যপালের 'রিপোর্ট কার্ডে'র জবাব দিয়ে ৯ পাতার চিঠি দেয় রাজ্য। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের অ্যাকশনে বোস। রাজ্যের সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ রাজ্যপালের।