ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: জীবনের জন্যই অক্সিজেন। কিন্তু সেই অক্সিজেন নিয়ে কৃত্রিম অভাব কোনওভাবেই বরদাস্ত করবে না রাজ্য প্রশাসন। তাই স্বাস্থ্য দপ্তর তৈরি করছে অক্সিজেন ওয়েবসাইট। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্যভবন। ওয়েবসাইট থেকেই জানা যাবে, কোন হাসপাতালে কত সিলিন্ডার (Oxygen Cylinder) বা কনসেন্ট্রেটর কাজ করছে। সেই তথ্যে চোখ রেখে গুরুতর রোগীকে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হবে।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ যত মারাত্মক হয়েছে, ততই চাহিদা বেড়েছে মেডিক্যাল অক্সিজেনের। অবস্থা সামাল দিতে ফাঁকা অক্সিজেন সিলিন্ডার কেনা হয়েছে। কেনা হয়েছে অক্সিজেন সিলিন্ডার এবং অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর। এমনকী, স্বাস্থ্য দপ্তরের অধীনস্থ মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট বোর্ড স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং জনসাধারণকে এই যন্ত্র দান করতে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করে। স্বাস্থ্যভবনের এই আবেদনে সাড়া দিয়ে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এগিয়ে এসেছে। এমনকী, বিদেশ থেকেও অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর পাঠানো হয়েছে। সেইসব যন্ত্র জেলার কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জীবন ফিরে পেয়েছেন ক্রিটিক্যাল কোভিড রোগীরা।
[আরও পড়ুন: দিল্লি হাই কোর্টের নোটিসের পরই সুর নরম, কেন্দ্রের নয়া নীতি মেনে নিচ্ছে টুইটার]
কিন্ত স্বাস্থ্যকর্তাদের অভিমত হল, কোন জেলার কোন কোভিড হাসপাতালে এমন জীবনদায়ী যন্ত্র কত রয়েছে তা ষ্পষ্ট নয়। ফলে প্রত্যন্ত এলাকার কোভিড হাসপাতাল বা প্রাথমিক অথবা গ্রামীণ হাসপাতালে প্রয়োজন থাকলেও পাঠানো যাচ্ছে না। আর এই সমস্যার সুষ্ঠ সমাধানের জন্য শুরু হবে অক্সিজেন ওয়েবসাইট। সূত্রের খবর, রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব এমন নির্দেশ জারি করতে চলেছেন। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, রাজ্যের সব মেডিক্যাল কলেজের এমএসভিপি এবং জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিককে আলাদাভাবে হিসাব রাখতে হবে। কোন হাসপাতালে কত অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর বা সিলিন্ডার রয়েছে তা যেমন জানাতে হবে, তেমনই কৃত্রিম অক্সিজেনের চাহিদা বাড়ছে না কমছে তা যথেষ্ট কারণ দিয়ে জানাতে হবে। এইসব তথ্য ওয়েবসাইটে যুক্ত করতে হবে।
এটা যেমন একটা দিক, তেমনই জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বলা হয়েছে অক্সিজেন কোভিড রোগীর জীবনদায়ী অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পাঠাতে হবে প্রত্যন্ত এলাকার কোভিড কেয়ার সেন্টার বা হাসপাতালে। যেখানে পৌঁছাতে দীর্ঘসময় দরকার। এরপর পাঠাতে হবে বড় কোভিড হাসপাতালে। কোনও অবস্থায় ব্যক্তিগত দরকারে এই যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। জেলা মেডিক্যাল স্তরে এমন যন্ত্র এবং সিলিন্ডার কত রয়েছে রোজ নিয়ম করে সেই তথ্য আলাদাভাবে নথিভুক্ত করতে হবে। এবং এইসব তথ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের অক্সিজেন ওয়েবসাইটে আপলোড করতে হবে। উদ্দেশ্য একটাই, গুরুতর অসুস্থ রোগীর পরিজন যাতে দ্রুত সেই হাসপাতাল বা কোভিড কেয়ার সেন্টারে পৌঁছতে পারেন। স্বাস্থ্যদপ্তর থেকে সংশ্লিষ্ট নোডাল অফিসার নিয়মিত এই ওয়েবসাইট দেখে প্রয়জনে নির্দেশ দেবেন। অক্সিজেন কনসেন্ট্রেটর সঠিকভাবে না চললে যন্ত্র অকেজো হতে পারে। তাই যন্ত্র চালানোর জন্য দফতর থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর আগে কোভিড হাসপাতালে শয্যা সমস্যা মেটাতে এমন ওয়েবসাইট চালু হয়েছিল।