কৃষ্ণকুমার দাস: ফের বিধানসভায় চর্চায় বাবুল সুপ্রিয়। এবার প্রকাশ্যেই সতীর্থ ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়লেন রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী। বিধানসভার করিডোরে রীতিমতো গলা চড়িয়ে ইন্দ্রনীলের সঙ্গে কথা বলতে শোনা যায় তাঁকে। সামনে সাংবাদিকরা থাকায় বাবুলকে শান্ত করার চেষ্টা করেন ইন্দ্রনীল। বলেন, ‘‘তুই এখানে এভাবে কথা বলিস না।’’ তাতেও বিশেষ লাভ হয়নি। বাবুল না থেমে উলটে সবার সামনেই গলার স্বর চড়িয়ে তাঁর বাক্যবাণ চালিয়ে যান। বাবুলের এমন মেজাজ হারানো হুমকি সুলভ ‘ডায়লগে’ উপস্থিত সাংবাদিকদের পাশাপাশি কিছুটা হকচকিয়ে যান নিরাপত্তারক্ষীরাও।
সপ্তাহ দুয়েক আগে বাবুলের দপ্তরের সঙ্গে সম্পর্কিত রাজ্য পর্যটন উন্নয়ন নিগমের দায়িত্ব মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনকে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। দুর্গাপুজোর কমিটিগুলি নিয়ে গত ২২ আগস্ট ইন্ডোরের বৈঠকে মন্ত্রী বাবুলের খোঁজ করে না পেয়ে শারদোৎসবে সমস্ত পুজো মন্ডপে পর্যটন দপ্তরের বাড়তি প্রচারের যাবতীয় দায়িত্ব ইন্দ্রনীলকে দেন মমতা। দায়িত্ব পেয়েই পুরানো অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ঝড়ের গতিতে কাজও শুরু করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে দুজনকে একসঙ্গে পর্যটনের কাজ করার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বাইরে বেরিয়েই তাঁর দপ্তরের কাজে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে করিডোরে মেজাজ হারান বাবুল।
[আরও পড়ুন: শহরের মোট জনসংখ্যার আড়াই শতাংশ হকার থাকবে, পুজোর মুখে নয়া সিদ্ধান্ত কলকাতা পুরসভার]
বিকেল সওয়া চারটে নাগাদ করিডোরে দেখা যায়, বাবুল আর ইন্দ্রনীল পাশাপাশি হেঁটে আসছেন। কিন্তু সমানে বচসা চলছে দু’জনের। ইন্দ্রনীলের উদ্দেশে উচ্চস্বরে বাবুল বলছেন, “তুমি আমার দপ্তরের কাজ আটকাচ্ছো কেন?” কিন্তু কী কাজ আটকাচ্ছেন তা বলেননি বাবুল। জবাবে পালটা ইন্দ্রনীল বলেন, “তোর যা বলার তুই দিদিকে গিয়ে বল।” বয়সে ইন্দ্রনীলের থেকে ছোট বাবুল বলেন, “হ্যাঁ, সে আমি বলেছি তো। দরকার হলে আবার বলব। তুমি এভাবে আমার কাজ আটকাতে পার না।”
ইন্দ্রনীলও চুপ ছিলেন না। পালটা বলেন, “তুই এখানে এভাবে কথা বলিস না। তোর কাজ আমি কেন আটকাতে যাব। বললাম তো, কিছু বলার থাকলে দিদিকে বল।” চিফ হুইপ নির্মল ঘোষের ঘরের সামনে পৌঁছে বাবুলও কিছুটা হুমকির সুরে জানিয়ে দেন, যার করার তিনি করে দেখাবেন। ততক্ষণে সাংবাদিকরা পিছু নেওয়ায় নিশ্চুপ হয়ে গিয়েছেন ইন্দ্রনীল। উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের পরেই বাবুল বিধানসভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। কিন্তু ইন্দ্রনীল প্রথমে মুখ্যমন্ত্রীর ও পরে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের ঘরে সন্ধে পৌনে ছ’টা পর্যন্ত স্বাভাবিক মেজাজেই ছিলেন। বিষয়টি জানতে চাইলে এড়িয়েও যান।