কৃষ্ণকুমার দাস: করোনার (Corona Virus) তৃতীয় ঢেউ আসার আগে মহানগরের ১০০ শতাংশ বাসিন্দাকে ডবল-ডোজের টিকাকরণ সম্ভব হবে না বলে স্বীকার করে নিলেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)। কারণ, চাহিদা অনুসারে রাজ্য তথা কলকাতাকে কোভিডের ভ্যাকসিন পাঠাচ্ছে না কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যের যতটা দৈনিক প্রয়োজন সে তুলনায় মাত্র ১৫ শতাংশ এবং কলকাতা পুরসভাকে পরিকাঠামোর চাহিদার প্রেক্ষাপটে মাত্র ২৫ শতাংশ ভ্যাকসিন দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার।
স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য, এখনও পর্যন্ত কলকাতায় মাত্র ২১ শতাংশ বসতিবাসীকে টিকা দেওয়া সম্ভব হয়েছে। বসতির ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সী বাসিন্দাদের সিংহভাগই ‘সুপার স্প্রেডার’ না হওয়ায় তাদের অনেকেরই টিকাকরণ সম্ভব হয়নি বলে স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য। অবশ্য তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে শহরবাসীর একাংশের টিকাকরণ না হওয়ার দায় পুরোপুরি কেন্দ্রের ঘাড়ে চাপিয়েছেন মুখ্যপ্রশাসক।
[আরও পড়ুন: নিশীথ প্রামাণিক বাংলাদেশি? কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন ব্রাত্য বসুর]
কলকাতা পুরসভায় ‘টক টু কেএমসি’ শেষে কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের আগে টিকাকরণ নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে ফিরহাদ বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার যদি চাহিদা অনুযায়ী প্রতিদিন ভ্যাকসিনের জোগান দিত, তবে এতদিন কলকাতাবাসীর টিকাকরণ ১০০ শতাংশ সম্পূর্ণ হয়ে যেত। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি, আর তৃতীয় ঢেউ আসার আগে সবাইকে ডবল ডোজ দেওয়া সম্পূর্ণ করা যাবে বলেও মনে হচ্ছে না। পুরসভার এখন যে পরিকাঠামো রয়েছে, তাতে আমরা প্রতিদিন এক লক্ষ মানুষকে টিকা দিতে পারব। কিন্তু দিচ্ছে ২৫ হাজার। কেন্দ্রের কাছ থেকে টিকা পাওয়ার উপর নির্ভর করতে হচ্ছে পুরসভাকে।”
তবে শহরের সুপার স্প্রেডার ও ৪৫ ঊর্ধ্ব অধিকাংশ মানুষকে টিকাকরণ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ হয়েছে বলে দাবি পুরসভার। শুধু তাই নয়, ১৮ ঊর্ধ্বদের টিকাকরণ শুরু করেও কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিনের জোগান না আসায় পুরসভাকে সেই উদ্যোগ বন্ধ রাখতে হয়েছে। এখনও অবশ্য ভবানীপুর-সহ বেশ কিছু জোনে সব বয়সের মানুষদের টিকাকরণ চলছে। তবে পুরসভা এখন দ্বিতীয় ডোজে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মহামারীতে মানবিক উদ্যোগ, ১০টি ক্লাবের প্রতিমা তৈরির দায়িত্ব নিল চোরবাগান সর্বজনীন]
ফিরহাদের কথায়, “এখনও পর্যন্ত পুরসভার তরফে কলকাতার ৭০ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া সম্পন্ন হয়েছে। কেন্দ্র থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে টিকা পেলে এতদিন ১০০ শতাংশ হয়ে যেত। দৈনিক পুরসভা ৫০ হাজার মানুষকে টিকা দিতে পারে কিন্তু কেন্দ্র গড়ে ২৫ হাজারের বেশি ভ্যাকসিন দিচ্ছে না।’’ স্বাস্থ্যদপ্তরের তথ্য হাতে পাওয়ার পরেই মুখ্যপ্রশাসক জানিয়েছেন, বাড়ি-বাড়ি ঘুরে স্বাস্থ্যকর্মীরা ইতিমধ্যে বসতিবাসীদের টিকা গ্রহণে সচেতন করছেন। তাঁর দাবি, কলকাতার ১৯৪টি ভ্যাকসিন সেন্টারে শুধুমাত্র মহানগরের বাসিন্দারা টিকা নিচ্ছেন না, পাশ্ববর্তী জেলা থেকেও প্রতিদিন বহু মানুষ এসে টিকা নিয়ে যাচ্ছেন।