সম্যক খান, মেদিনীপুর: এবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন রাজ্য়ের মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো। আদালতের নির্দেশে স্কুলের ‘অবৈধ’ চাকরি হারিয়েছেন তাঁর ভাই খোকন মাহাতো। এরপরই মন্ত্রীর চ্যালেঞ্জ, তাঁর ভাই এত কম নম্বর (১২) পেতে পারে না। এসএসসির সার্ভারে ভুল আছে। তাঁর ভাই যদি সত্যি এত কম নম্বর পেয়ে থাকে, তাহলে মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেবেন বলেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন শ্রীকান্ত মাহাতো। তাঁর অভিযোগ, সমস্ত ত্রুটি বিচ্যুতি ঘটিয়েছে এসএসসি।
আদালতের নির্দেশে, এসএসসি গ্রুপ সি-র চাকরি খুইয়েছেন মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতোর ভাই খোকন মাহাতো। এরপর এবার ভাইয়ের পক্ষে ব্যাট হাতে নেমে পড়লেন খোদ মন্ত্রী। শনিবার মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল পার্টি অফিসে এক সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে এসএসসিকে তুলোধোনা করেছেন মন্ত্রী। কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে মন্ত্রী বলেছেন, তাঁর ভাই যথেষ্ট বুদ্ধিমান। রাজ্য তো বটেই সর্বভারতীয় স্তরেও একাধিক চাকরির পরীক্ষায় পাশ করে আছে। এসএসসির ওএমআর শিটে তাঁর ভাইয়ের নম্বর মাত্র ১২ দেখানো আছে। কিন্তু তাঁর ভাই কোনওমতেই ১২ পেতে পারেন না। ভাই সত্যিই এই নম্বর পেলে তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দেওয়ারও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন। মন্ত্রীর দাবি, এসএসসির সার্ভারে নিশ্চয়ই কোনও ভূল আছে। তাই ভুলে ভরা রেজাল্ট এসেছে। তিনি পুরো বিষয়টির ফরেনসিক পরীক্ষাও দাবি করেছেন।
[আরও পড়ুন: লকডাউনের ঘোষণা শুনেই কী করেছিলেন? কলকাতায় এসে জানালেন রাজকুমার রাও]
সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ কয়েকটি ওএমআর শিট, একাধিক কাগজপত্র দেখিয়ে মন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে অনেক ক্ষেত্রেই এসএসসির ভুল আছে। ওএমআর শিটের হার্ডকপি ও মূল প্রশ্নপত্রের ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে পুনরায় মূল্যায়ণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। এসএসসির তালিকাকে বিকৃত তালিকা বলে কটাক্ষ করে মন্ত্রীর দাবি, যাঁরা ভুল করেছেন তাঁদের চাকরি যাওয়া দরকার। কিন্তু ভুলটা ভুল কি না তা সঠিকভাবে যাচাই করা দরকার। মন্ত্রীর কথায়, ইতিমধ্যে ত্রুটি বিচ্যুতির কথা তুলে ধরে চাকরিহারা প্রার্থীরা উচ্চ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়েছেন। প্রয়োজনে তাঁরা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যাবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
এদিকে এসএসসির বিরুদ্ধে অনাস্থা জ্ঞাপন করে রাজ্যেরই এক মন্ত্রীর এধরনের নজিরবিহীন সাংবাদিক সম্মেলনকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধীরা। বিজেপি জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাস বলেছেন, “বেআইনিভাবে নিজের ভাইকে চাকরিতে ঢুকিয়েছিলেন মন্ত্রী। শুধু তাই নয়, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে চাকরি বিক্রি হয়েছে। মন্ত্রী হয়তো বুঝতে পেরে গিয়েছেন যে খুব শীঘ্রই সিবিআই ও ইডির ডাক পেতে চলেছেন। তাই হয়তো আগেভাগে নিজেদেরই সরকার পরিচালিত এসএসসিকে কাঠগড়ায় তুলে জলঘোলা করার চেষ্টা করছেন।”