সৌরভ মাজি, বর্ধমান: যুব ভাইবোনেরা দলের সম্পদ। যুবরাই পারেন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে উৎখাত করতে। যুবরা জীবন বাজি রেখে লড়াই করতে পারে। আমাদের যুবরা চোখে চোখ রেখে কথা বললে সিপিএম-বিজেপি রাস্তায় নামার সাহস পাবে না। বর্ধমানে দলীয় এক কর্মসূচিতে এই ভাষাতেই যুব তৃণমূল নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করলেন রাজ্যের প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। একইসঙ্গে যুবদের পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে সতর্কবার্তাও দিয়েছেন। বলেছেন, “পঞ্চায়েত টিকিট পাব, প্রধান হব, সদস্য হব সেই স্বপ্ন দেখবেন না। দলের জন্য কাজ করুন। কারা টিকিট পাবে তা নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আমাদের যুব আইকন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) ঠিক করবেন।” ইডি-সিবিআই বিজেপির শাখা সংগঠন হিসেবে সারা দেশে বিরোধী রাজ্যগুলিতে কাজ করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
২৯ মার্চ কলকাতায় শহিদ মিনারের পাদদেশে ছাত্র-যুবদের নিয়ে সভা হবে। সেখানে প্রধান বক্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সভার প্রস্তুতিতে এদিন বর্ধমানের সংস্কৃতি লোকমঞ্চে সভার আয়োজন করা হয়েছিল। স্বপনবাবু ছাড়াও ছিলেন যুব তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি রাসবিহারী হালদার, বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার, বিধায়ক খোকন দাস, তৃণমূলের রাজ্যের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। সেই সভায় মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যের প্রাপ্য টাকা দিচ্ছে না। বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা আটকে দিচ্ছে। কেন্দ্রের বঞ্চনার বিরুদ্ধে যুবদের সোচ্চার হতে হবে। মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তা বলতে। ইডি-সিবিআই শুধু আমাদের রাজ্যে নয়, সারা দেশে বিরোধীদল শাসিত রাজ্যে বিজেপির শাখা সংগঠন হিসেবে কজ করছে। কেউ অন্যায় করলে, দোষ করলে ইডি-সিবিআই ধরুক তাতে আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু বিজেপির শাখা সংগঠনের মতো বেছে বেছে বিরোধীদের নিশানা করাতে আপত্তি আছে।”
[আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের দিন ঘোষণার আগেই নন্দীগ্রামে প্রার্থীদের নাম প্রকাশ! শুভেন্দুর গড়ে বিতর্ক]
সভা থেকে বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেসের গোপন আঁতাঁত নিয়েও ইঙ্গিত দিয়েছেন মন্ত্রী। স্বপনবাবু বলেন, “গ্রামে ঘুরি তাই জানতে পারছি সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি হাত মিলিয়েছে। এক জায়গায় বিজেপি প্রার্থী দেবে। অন্যত্র সিপিএম প্রার্থী দেবে। আবার কোথাও ড্যামি প্রার্থী দিয়ে তলায় তলায় সমর্থন জানাবে। এই নিয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।” এই পরিস্থিতি মোকাবিলার নিদানও দিয়েছেন তিনি। যুবদের অগ্রণী ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচি চলছে। যুব আইকন অভিষেকবাবু কর্মসূচি ঠিক করে দিচ্ছেন। সেই পথে গ্রামের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।” ইডি-সিবিআইকে মন্ত্রীর আক্রমণ নিয়ে বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেছেন, “তদন্তকারী সংস্থাকে এইভাবে আক্রমণ করা মন্ত্রীর শোভা পায় না। সাধারণ মানুষ চায় দুর্নীতিগ্রস্থ তৃণমূলকে বাংলা থেকে সরাতে। তৃণমূলের যুব সমাজকে বলবো দুর্নীতিগ্রস্ত তৃণমূল সরিয়ে নিজেদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত রাখুন।”