চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে গোঁসা করেছিলেন। অনুগামীরা টিকিট না পাওয়ায় দলের বিরুদ্ধেই রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভোলবদল করলেন মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। সৌজন্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চরম আকার নেওয়ার আগেই মমতার হস্তক্ষেপে সেটা মেটার ইঙ্গিত মিলল।
দলের জেলা সভাপতি এবং ব্লক সভাপতিরা টিকিট এবং প্রতীক বণ্টনের ক্ষেত্রে বিধায়কদের গুরুত্ব দিচ্ছে না। এই অভিযোগে ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর (Humayun Kabir), নওদার বিধায়ক শাহিনা মমতাজ বেগম, রেজিনগরের বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরী ও জলঙ্গির বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক একদিন আগেই ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন। শীর্ষ নেতৃত্বকে একপ্রকার চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি দিয়ে দেন, জেলা সভাপতিদের না সরানো হলে তাঁরা দলের বিরুদ্ধেই পথে নামবেন। প্রকাশ্যে সাংবাদিক বৈঠকে দলের চার বিধায়কের এই বিস্ফোরণে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়তে হয় মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলকে।
[আরও পড়ুন: লাগাতার আন্দোলনে সাফল্য! পুরুলিয়ার দুটি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী কুড়মি সমর্থিত নির্দল প্রার্থী]
এরপরই আসরে নামে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। ইটাহারের বিধায়ক মোশারফ হোসেনকে দূত হিসাবে হুমায়ুনের কাছে পাঠান মমতা। নিজেও মিনিট পাঁচেক তাঁর সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী। বুধবার সকালে নেত্রীর দূত হিসাবে বহরমপুর যান রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক (Moloy Ghatak)। তাঁর সঙ্গে কথা বলার পরই নিজের অবস্থান থেকে সরে এলেন ভরতপুরের বিধায়ক। জানিয়ে দিলেন, দলের জেলা সভাপতিদের সরানো নিয়ে যে চূড়ান্ত হুঁশিয়ারি তিনি দিয়েছিলেন আপাতত সেটা প্রত্যাহার করছেন। সম্মিলিতভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে (WB Panchayat Election 2023) দলের প্রার্থীদের জেতাতে চান তিনি। বিক্ষুব্ধ শিবিরের আরেক বিধায়ক শাহিনা মুমতাজের মেয়ে নির্দল হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তিনিও শেষবেলায় চোখের জলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
[আরও পড়ুন: বড়ঞায় প্রতীকের ফর্ম নিয়ে অশান্তির জের, রাতভর বিডিও অফিসের সামনে ধরনায় অধীর চৌধুরী]
এদিন সকালে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে প্রচারেও নামতে দেখা যায় তাঁকে। বুধবার দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে নিজের ভারতপুর বিধানসভা এলাকার সালারে একটি মিছিল করেন হুমায়ুন। সূত্রের খবর দলের শীর্ষ নেতৃত্ব তাঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ভোটের পর তাঁর সব দাবিদাওয়া শোনা হবে এবং তাঁকে কোনওভাবে বঞ্চিত করা হবে না। হুমায়ুন জানিয়েছেন, ভোটের পর দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে অবহেলিত কর্মীদের দাবি নিয়ে আলোচনায় বসবেন তিনি।