সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রাতভর মশার গুনগুন! কমিশনের দেওয়া মশা মারার একটা ম্যাটে কোন কাজই হলো না। কার্যত বিনিদ্র রজনী কাটিয়ে ভোটের টেবিলে ঢুলছেন ভোটকর্মীরা। এই ছবি শুধু পুরুলিয়ার জঙ্গলঘেরা বুথ গুলিতেই নয়। শহর ঘেঁষে থাকা পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের চাকলতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক বুথে ভোটকর্মীরা মশার উপদ্রবের কথা শোনালেন। দেখা গেল ভোটের (WB Panchayat Vote 2023) টেবিলে ঝিমোচ্ছেন ফোর্থ পোলিং অফিসার। ভোটারের আঙুলে কালি দেবেন কি? চোখ কচলেই যাচ্ছেন।
পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের চাকলতোড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৬ নম্বর চাঁদরাডি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার জগদীশ মাহাতো বলেন, “একটুও ঘুম হয়নি। সারা রাত কানের কাছে মশা গুনগুন করেছে। কমিশনের কিটে যে ম্যাট ছিল তাতে কাজ হয়নি।” একই অভিজ্ঞতা সুদূর বান্দোয়ানের জঙ্গলঘেরা আসনপানি বুথের সেকেন্ড পোলিং অফিসার তাজউদ্দিন আনসারি, ফোর্থ পোলিং অফিসার সিরাজ আনসারির। তারা বলেন, “ভাগ্যিস বুদ্ধি করে মশা মারার ধূপ বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিলাম। না হলে বুথের ভেতর টেকা যেত না। একটুও ঘুম হয়নি। চোখ যেন বুজে আসছে।”
[আরও পড়ুন: ‘আমায় ছেড়ে দিন’, সুকান্তর কাছে হাতজোড় করে আবেদন রাজ্য পুলিশের কর্মীর]
পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, বাঘমুণ্ডি, আড়শা, বলরামপুর জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের খাতায় ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকা বলে চিহ্নিত। ফলে মশা দমনে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বনের প্রয়োজন ছিল কমিশনের। জঙ্গলমহলের বুথ গুলিতে মশার গুনগুনানিতে রাত জেগে এমনই বক্তব্য এই এলাকায় ভোট করাতে আসা কর্মীদের। এই জেলার বেশ কয়েকটি বুথে এক হাজারের বেশি ভোটার রয়েছেন। ফলে ত্রি-স্তর পঞ্চায়েতের ভোট করাতে এই কেন্দ্র গুলিতে রাত হয়ে যাবে। ফলে বিনিদ্র রজনী কাটানোর পর দীর্ঘ ভোটের লাইনের জন্য আরেকটা রাত জাগার ধকল কি করে সইবেন সেটাই ভাবছেন ভোট কর্মীরা। ম্যালেরিয়া কবলিত এলাকা অযোধ্যা পাহাড়তলির
আড়শার সিরকাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের লছমনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট ডিউটি পড়েছে রাজকুমার মন্ডলের। তিনি ওই বুথের প্রিসাইডিং অফিসার।
তাঁর কথায়, ” সারারাত যদি কানের সামনে মশা গান গায় তাহলে ঘুম হবে কি করে বলুন? চোখ বুজে আসছে। মাথা-কপাল যেন ফেটে যাচ্ছে। কিন্তু কিছু করার নেই। বুথের জায়গা ছোট থাকায় অনেক ধীরগতিতে ভোট হচ্ছে। ফলে ক্লান্তি যেন আরও বাড়ছে।” এই বুথের থার্ড পোলিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা শুভাশিস হাঁসদা বলেন, “অন্য বুথে কি হয়েছে জানি না। কমিশন আমাদের যে কীট দিয়েছে তাতে মশা মারার ধূপ, ম্যাট কিছুই ছিল না।”