শেখর চন্দ্র, আসানসোল: ভোটের দায়িত্বে এসে ইভিএম বিতরণ কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল এক মহিলা ভোটকর্মীর। মর্মান্তিক ঘটনটি ঘটেছে রবিবার আসানসোল (Asansol) ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ডিসিআরসি কেন্দ্রে। মৃতের নাম অনিমা মুখোপাধ্যায় (৪৫)। তাঁর বাড়ি রূপনারায়ণপুরের গুরোদোয়ারা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, এদিন ভোটের দায়িত্ব নিতে ডিসিআরসি কেন্দ্রে এসেছিলেন সালানপুরের পিঠাইকেয়ারি প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষিকা অনিমাদেবী। কিন্তু ইভিএম ও ভিভিপ্যাট বিতরণের সময়ে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। অভিযোগ, এই সময় ডিসিআরসি কেন্দ্রে কোনও মেডিক্যাল টিম ছিল না। দীর্ঘক্ষণ শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে ওখানেই পড়েছিলেন অনিমাদেবী। পরে অন্যান্য ভোটকর্মীরা গাড়ির ব্যবস্থা করে তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠান। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসক মৃত বলে তাঁকে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, মৃত অনিমা দেবী স্বামীর সঙ্গে থাকেন না। তাঁর এক ছেলে রয়েছে। সে ক্লাস নাইনে পড়ে। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: ‘প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে থাকেন না কেন?’, করোনা নিয়ে মমতাকে বিঁধলেন নাড্ডা]
অন্যদিকে, বেলাগাম করোনা আবহে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম কার্যত মানা হল না আসানসোলের ডিসিআরসি সেন্টার অর্থাৎ ইভিএম বিতরণ কেন্দ্রে। আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে দেখা গেল হাজার হাজার ভোটকর্মী ধাক্কাধাক্কি, ধস্তাধস্তি করে নিজেদের দায়িত্ব বুঝে নিয়েই ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় চূড়ান্ত আতঙ্কে রয়েছেন ভোটকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, কোভিড প্রটোকল মানা হচ্ছে না এখানে। তাঁদের যে করোনা কিট দেওয়ার কথা ছিল তাও দেওয়া হয়নি। আশঙ্কা ভোটপর্ব মিটলেই করোনা আক্রান্ত হতে পারেন জেলার ১৪ হাজার ভোটকর্মী। এই পরিস্থিতির জন্য জেলা নির্বাচন আধিকারিকদের চূড়ান্ত অব্যবস্থাকেই অবশ্য দায়ী করলেন ভোটকর্মীরা।
উল্লেখ্য, করোনা সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে জেলায় ৬১৯ টি বুথ বাড়ানো হয়েছে। গত নির্বাচনে পশ্চিম বর্ধমানে ২ হাজার ৪৪৬ টি বুথ ছিল। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০৬৫টি। এমনকী আগে যে সব বুথে ১২০০ বা তার বেশি ভোটার থাকত, এবার তা কমিয়ে ১০৫০ ভোটার করা হয়েছে। মূলত দূরত্ববিধির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু ভোটকর্মীদের ইভিএম বিতরণ কেন্দ্রে সেই দূরত্ববিধি মানা হল না বলে অভিযোগ।