নব্যেন্দু হাজরা: যার তার হাতে আর গাড়ির স্টিয়ারিং নয়। বেসরকারি গাড়ির চালকদেরও এবার নিয়ন্ত্রণে আনতে চলেছে সরকার। পরিবহণ দপ্তরের তরফে দেওয়া হবে ইউনিক ডকুমেন্ট আইডিন্টেফিকেশন নম্বর। এর ফলে সরকার জানতে পারবে কোন গাড়ি কোন চালকের হাতে রয়েছে। কোনও সমস্যা হলে দ্রুত গাড়ির মালিকের পাশাপাশি চালককেও চিহ্নিত করতে সুবিধা হবে। একইসঙ্গে গাড়ি ট্র্যাক করতেও সুবিধা হবে।
এবিষয়ে সম্প্রতি পরিবহণ দপ্তর একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তাতে বলা হয়েছে, যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই, যে কোনও গাড়ির মালিক ও চালকের যাবতীয় তথ্য পরিবহণ দপ্তরের পোর্টালে রাখা হচ্ছে। রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “যাত্রী নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে আমরা ব্যক্তিগত ও বেসরকারি গাড়ির চালকদেরও তথ্য রেখে দিচ্ছি। যাতে কোনও সমস্যা হলে তাঁদের দ্রুত চিহ্নিত করা যায়।”
[আরও পড়ুন: ‘আবার বিবাহ অভিযান’-এর ফাঁদে অঙ্কুশ-অনির্বাণ-রুদ্রনীল, এবার তুলকালাম থাইল্যান্ডে]
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বর্ধমানের কয়লা মাফিয়া রাজু ঝাঁ খুনে গাড়ির মালিক এবং চালকের সন্ধান পেতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছে প্রশাসনকে। যে গাড়িতে চড়ে দুষ্কৃতীরা এসেছিল, সেটির বর্তমান মালিক এবং ওইদিন কার হাতে স্টিয়ারিং ছিল, তা জোগাড় পেতে ছুটে বেড়াতে হয় পুলিশকে। মনে করা হচ্ছে, ওই ঘটনার জেরেই নয়া এই বিজ্ঞপ্তি করা হল। ইউডিআইএন পোর্টালে ঢুকে এই নথিভুক্তিকরণের কাজ করতে হবে। মালিকরা জানাবেন, কোন চালকের হাতে তাঁর গাড়ির স্টিয়ারিং থাকবে। সেই মতো চালককে এই আইডেন্টিফিকেশন নম্বর দেওয়া হবে। সেই নম্বর দিয়ে দেওয়া হবে চালকদের মোবাইলে। তাছাড়া কোনও ড্রাইভার সাপ্লাই এজেন্সিদের চালকদেরকেও এই নম্বর নিতে হবে। সেক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হলে ওই এজেন্সিকে ধরবে পুলিশ অথবা পরিবহণ দপ্তর।
পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তার কথায়, প্রত্যেক বেসরকারি গাড়ির চালকের তাঁর মালিকের থেকে সম্মতিপত্র নেওয়ার নিয়ম। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা হয় না। অচেনা চালকের হাতেও অনেকে গাড়ি ছেড়ে দেন। এবার থেকে তা আর হবে না। এই নম্বর নিতে হবে প্রত্যেক চালককেই। স্কুলবাস এবং পুলকারের ক্ষেত্রে অনেকটাই নিশ্চিন্ত হবেন পড়ুয়াদের অভিভাবকরা। কারণ চালকের ঠিকুজি-কুষ্টি যাবতীয় থেকে যাবে পরিবহণ দপ্তরের খাতায়। ইউডিআইএন নম্বরটা সংযোজিত খাকবে মালিক এবং চালকের আইডিতে। গাড়ি চেকিংয়ের সময় এই নম্বর দেখাতে হবে চালকদের। পরিবহণ দপ্তরের ইতিমধ্যেই প্রায় দেড়শো রকমের অনলাইন পরিষেবা শুরু করেছে। এটি তারমধ্যে আরও একটি সংযোজন।
[আরও পড়ুন: জলাধার সংরক্ষণে এক নম্বরে বাংলা, শুভেন্দুর ভিত্তিহীন অভিযোগকে তীব্র কটাক্ষবাণ তৃণমূলের]
মন্ত্রী বলেন, “গাড়ি কেনার সময় শুধু মালিকদের তথ্য থাকে পরিবহণ দপ্তরের খাতায়। কিন্তু তাঁর গাড়ি কে চালান, তা জানতে পারে না পুলিশ বা পরিবহণ দপ্তর। নয়া নিয়মে এবার চালকদের তথ্যও সব থাকবে আমাদের কাছে।” ইউডিআইএন নম্বরটি আধার নম্বরে সংযোজিত করা থাকবে। গাড়ির মালিকের আধার নম্বর দিলেই বোঝা যাবে কার গাড়ি কে চালাচ্ছে। এক বছর পর রিনিউ করতে হবে এই নম্বর। নতুন আবেদনপত্র করে। মালিক চাইলে এই নম্বর যে কোনও মুহূর্তে তা বাতিল করতে।