কলহার মুখোপাধ্যায়: অতিমারীকালে (Covid-19) একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। অথচ বৃত্তির ক্ষেত্রে জরুরি হচ্ছে মার্কশিট। সে কারণে গত মাসে একাদশের মূল্যায়নের ফর্মুলা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সোমবার পূর্বের বিজ্ঞপ্তির কয়েকটি বিষয়ে অদলবদল ঘটিয়ে পুনরায় তা প্রকাশিত হল।
আগের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছিল শিক্ষা মহলে। তা দূর হয়েছে নয়া বিজ্ঞপ্তিতে, এমনটাই মনে করছে শিক্ষা মহল। শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, আগের নিয়মে কোনও ছাত্রের মাধ্যমিকে চারটি বিষয়ের সর্বোচ্চ নম্বরের গড় ২৫ থেকে ২৯ হলে তারা সংসদের নিয়ম অনুয়াযী অকৃতকার্য হয়ে যাচ্ছিল। যা এই নয়া বিজ্ঞপ্তিতে দূর হল। এদিনের বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার করে জানানো হয়েছে, যে ছাত্র-ছাত্রীরা ২৫ থেকে ২৯ নম্বর পাবে, তাদের চারটি বিষয়ের সর্বোচ্চ নম্বরের গড় ৩০ হিসাবে গণ্য হবে। ১১ আগস্টের বিজ্ঞপ্তিতে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ একাদশ শ্রেণির মার্কশিট তৈরির পদ্ধতি জানিয়েছিল। তাতে বলা ছিল কোনও বোর্ডের (মাধ্যমিক) পরীক্ষার চারটি বিষয়ের প্রাপ্ত সর্বোচ্চ নম্বরের গড় একাদশ শ্রেণির লিখিত অংশের (থিয়োরি) নম্বর অনুযায়ী শতাংশের হারে বিবেচিত হবে। অর্থাৎ মাধ্যমিকের চারটি বিষয়ের গড় যদি আশি হয়, তবে একাদশ শ্রেণিতে সত্তর নম্বরের লিখিত অংশের ক্ষেত্রে প্রাপ্ত নম্বর হবে আশি নম্বরের ৭০ শতাংশ অর্থাৎ ৫৬ এবং ৮০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৪। বাকি ২০ বা ৩০ নম্বর ব্যবহারিক বা প্রকল্প অংশের জন্য যে কোনও অ্যাক্টিভিটি টাস্ক বা অনলাইন পরীক্ষা বা বিদ্যালয় নির্বাচিত প্রজেক্টের মাধ্যমে নম্বর দেবে। এতে সমস্যা দেখা দিতে পারত বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন শিক্ষকদের একাংশ।
[আরও পড়ুন: Kasba Fake Vaccine: তদন্তে আরও তৎপর ED, মিলল দেবাঞ্জন দেবকে জেলে গিয়ে জেরার অনুমতি]
কলেজিয়াম অফ অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড মাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেড মিস্ট্রেসেস সংগঠনের বক্তব্য ছিল, কোনও ছাত্রের মাধ্যমিকের চারটি বিষয়ের সর্বোচ্চ নম্বরের গড় ২৮। তাহলে এই ফর্মুলাতে সে ৭০—এর মধ্যে পাবে ২৮×৭০% = ১৯.৬ এবং ৮০-এর মধ্যে পাবে ২৮×৮০% = ২২.৪, অর্থাৎ লিখিত পরীক্ষার পাসের জন্য প্রয়োজনীয় ন্যূনতম নম্বর ২১ বা ২৪ পেতে ব্যর্থ অর্থাৎ একাদশে বিনা কারণে ফেল করে যেত। যা অসম্ভব।
এই সমস্যাটির মূলে ছিল পাশের ন্যূনতম নম্বরের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পার্থক্যের জন্য, যেহেতু মাধ্যমিকে প্রতিটি বিষয়ে ২৫ শতাংশ নম্বর পেলেই পাস আর উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পাস করতে দু’টি ভাষার পেপার ও অন্য তিনটি বিষয়ের প্রতিটির থিওরি ও প্রজেক্ট/প্র্যাক্টিক্যালে আলাদাভাবে ৩০ শতাংশ পেতে হয়। এখন এই বিজ্ঞপ্তির ফলে মাধ্যমিকের চারটি বিষয়ের সর্বোচ্চ নম্বরের গড় ২৫ -২৯ হলে তা ৩০ ধরে হিসাব করতে হবে। ফলে সমস্যা থাকবে না। কলেজিয়ামের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস জানান, বিষয়টি তাঁরা সংসদকে জানিয়েছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, বর্তমান অবস্থায় এছাড়া কোনও উপায় নেই কিন্তু ভবিষ্যতে যেন পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যতিরেকে পরীক্ষার মূল্যায়ন না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য শিক্ষা দপ্তরের কাছে দাবি জানাচ্ছি।