সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: AK-47 রাইফেল হাতে ভারী বুটের রুট মার্চ আর নয়! কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তার দায়িত্ব এবার কি থাকবে সেখানকার পুলিশ বাহিনীর হাতে? উপত্যকা থেকে বিতর্কিত আফস্পা (AFSPA) হঠাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ইঙ্গিতে বাড়ল জল্পনা। জম্মু ও কাশ্মীরের এক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানালেন, “আমরা জম্মু কাশ্মীর (Jammu Kashmir) থেকে ‘সশস্ত্র বল অধিনিয়ম’ বা ‘আফস্পা’ হঠানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেছি।”
দশকের পর দশক ধরে হিংসাদীর্ণ জম্মু ও কাশ্মীরে লাগু রয়েছে বিতর্কিত আফস্পা আইন। যার জেরে ওই এলাকায় নিরাপত্তার স্বার্থে যে কারও বাড়িতে তল্লাশি, গ্রেপ্তার ও প্রয়োজনে গুলি চালানোর অবাধ অনুমতি দেওয়া রয়েছে সেনাকে। তবে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পর উপত্যকা থেকে আফস্পা আইন প্রত্যাহারের দাবি তুলেছিল সেখানকার একাধিক সংগঠন।
এ প্রসঙ্গে অমিত শাহ (Amit Shah) বলেন, “আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর থেকে সেনা প্রত্যাহার করে সেখানে নিরাপত্তা রক্ষার ভার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার। আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের উপর ভরসা করা যেত না। কিন্তু এখন সেখানে একাধিক অভিযানে নেতৃত্ব দিচ্ছে পুলিশই। ফলে এখন সেখান থেকে আফস্পা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আমরা চিন্তাভাবনা করতে পারি।” পাশাপাশি শাহ বলেন, “উত্তর-পূর্বের অন্তত ৭০ শতাংশ জায়গা থেকে ইতিমধ্যেই আফস্পা তুলে নেওয়া হয়েছে। যদিও জম্মু ও কাশ্মীরে এখনও তা চালু রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘তাঁর প্রজ্ঞা বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে’, বেলুড় মঠের অধ্যক্ষের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ মোদি]
জম্মু ও কাশ্মীরের বিধানসভা নির্বাচন প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন শাহ। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সেখানে নির্বাচন হবে বলে বার্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, “জম্মু ও কাশ্মীরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর।” সেই সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দলের প্রতিনিধিদের খোঁচা মেরে তিনি জানান, “এই গণতন্ত্র শুধুমাত্র তিনটি পরিবারের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে না, এটা জনগণের গণতন্ত্র হবে।” শাহর দাবি, “যদি কেউ কাশ্মীরকে রক্ষা করতে পারেন তবে সেটা একমাত্র নরেন্দ্র মোদি।”
[আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে কুকথা বলায় দুঃখপ্রকাশ করেও অবস্থানে অনড় দিলীপ, জবাব তলব ক্ষুব্ধ নাড্ডার]
প্রসঙ্গত, গত শতকের নয়ের দশকে জম্মু ও কাশ্মীরে বেলাগাম সন্ত্রাসের জেরে এই রাজ্যে প্রয়োগ হয়েছিল আফস্পা আইন। গোটা জম্মু ও কাশ্মীরের নিরাপত্তার ভার চলে যায় সেনার হাতে। তার পর থেকে এখনও সেখানে লাগু রয়েছে এই আইন। তবে শুধু জম্মু ও কাশ্মীর নয়, হিংসার জেরে উত্তর-পূর্বের একাধিক রাজ্যেও এই আইন লাগু হয়। ২০১৫ সালে ত্রিপুরা ও মেঘালয় থেকে আফস্পা প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও নাগাল্যান্ড রাজ্যে এখনও লাগু রয়েছে এই আইন। অসমেও বেশ কিছু জেলায় এখনও আফস্পা লাগু রয়েছে।