নিরুফা খাতুন: দুর্গাপুজোর (Durga Puja) লাস্ট ল্যাপে আবহাওয়া ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, তেমন পূর্বাভাস ছিলই। এবার ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার কথা শোনাল হাওয়া অফিস। সোমবার অর্থাৎ নবমী থেকেই তার প্রভাবে ঝড়বৃষ্টি শুরু হতে পারে উৎসবমুখর বাংলায়। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর, বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্তটি গভীর থেকে অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তা ঘূর্ণিঝড়ের (Cyclone) আকার নেবে। নাম দেওয়া হয়েছে ‘হামুন’। এই নামকরণ করেছে ইরান (Iran)। তার পর ঘূর্ণিঝড়টি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে সরে বাংলাদেশের উপকূলবর্তী এলাকায় আছড়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
হামুনের প্রভাবে সোমবার অর্থাৎ নবমী থেকেই রাজ্যের উপকূল অঞ্চলে শুরু হতে পারে বৃষ্টি। সঙ্গে হালকা ঝোড়ো হাওয়া। বিশেষত সুন্দরবন (Sunderbans) এলাকায় প্রভাব বেশি পড়ার আশঙ্কা। নবমী থেকে একাদশী পর্যন্ত থাকবে দুর্যোগ। দশমী ও একাদশীর দিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে। তাঁদের সোমবার রাতের মধ্যেই তীরে ফিরে আসতে পরামর্শ দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।
[আরও পড়ুন: বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে যথেচ্ছ ফিজ নয়, নিয়ম বেঁধে দিল রাজ্য]
দক্ষিণবঙ্গে নবমীর দিন থেকে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের পরোক্ষ প্রভাবে সোম ও মঙ্গলবার হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব বর্ধমান এবং পশ্চিম মেদিনীপুরে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে মেঘলা আকাশ। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সামান্য সম্ভাবনা। দশমীতে ‘রেনি ডে’ পরিস্থিতি হতে পারে কয়েক জেলায়। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা। মেঘলা আকাশ থাকবে। বেশি বৃষ্টি হবে উপকূল ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে কয়েক পশলা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সব জেলাতে।
একাদশীর দিন পূর্ব মেদিনীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া জেলাতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। বাকি জেলায় বৃষ্টির পরিমাণ কমবে। আবহাওয়ার উন্নতি হবে বেলার দিকে। তবে ২৭ অক্টোবর, শুক্রবার পুজো কার্নিভালের দিন কলকাতায় পরিষ্কার আকাশ ও মনোরম পরিবেশ থাকবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই ওইদিন। উত্তরবঙ্গের আবহাওয়া এই কদিন শুষ্ক থাকবে।
[আরও পড়ুন: অনুরাগের হাতে হাত, নাড্ডার পাশে বসে বিশ্বকাপে মজে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী]
এই মুহূর্তে উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঘূর্ণিঝড়। এর পর উত্তর-পশ্চিম দিক ছেড়ে এটি ক্রমশ বাঁক নিয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অর্থাৎ বাংলাদেশের দিকে এগোবে। বুধবার সন্ধে নাগাদ খেপুপাড়া ও চট্টগ্রামের মাঝামাঝি স্থলভাগে হামুন প্রবেশ করবে গভীর নিম্নচাপ হিসেবে। এর প্রভাবে দখিনা বাতাসে ভর করে জলীয় বাষ্প ঢুকতে পারে। বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে উপকূলের জেলাগুলিতে। সমুদ্র উত্তাল হবে।