বাবুল হক, মালদহ: “বিজেপিকে রুখতে প্রয়োজনে তৃণমূলকে (TMC) সমর্থন করব।” ভোটের মুখে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রের কংগ্রেস সাংসদ তথা হাত শিবিরের বর্ষীয়ান নেতা আবু হাসেম খান চৌধুরী (ডালু) ( Abu Hasem Khan Choudhury)। ডালুবাবুর দাবি, বিজেপি যেভাবে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছে, তাতে তাঁর কাছে বিজেপিকে আটকানোটা বেশি জরুরি। তাই ভোটের পর যদি এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, যাতে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে একটি দলকে বেছে নিতে হয়, তাহলে আমি ব্যক্তিগতভাবে তৃণমূলকে সমর্থন করব। বিজেপি যেভাবে ধর্মের নামে দেশটাকে বিক্রি করে দিচ্ছে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না।
বর্ষীয়ান নেতার এই মন্তব্যে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন জল্পনা তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি ভোট পরবর্তী পরিস্থিতিতে সংযুক্ত মোর্চার সঙ্গ ছেড়ে তৃণমূলকে সমর্থন করতে প্রস্তুত কংগ্রেস (Congress)? ডালুবাবু যতই নিজের বক্তব্যকে একান্তই ব্যক্তিগত মত বলে দাবি করুন না কেন, রাজনৈতিক মহলে কিন্তু জোর গুঞ্জন শুরু হয়েছে। বস্তুত, বাংলায় তৃণমূল-বিজেপি লড়াইয়ের মধ্যে বামফ্রন্ট এবং আব্বাস সিদ্দিকির আইএসএফকে সঙ্গে নিয়ে সংযুক্ত ফ্রন্ট তৈরি করেছে কংগ্রেস। এই মুহূর্তে এই সংযুক্ত মোর্চা তৃণমূল এবং বিজেপি দুই শিবিরের থেকেই সমান দূরত্ব বজায় রাখছে। ভোটের পর ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হলে, সংযুক্ত মোর্চা তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে কাকে সমর্থন করবে, তা নিয়েও মুখে কুলুপ এটেছেন জোট নেতারা। এর মধ্যেই ডালুবাবুর বক্তব্য নতুন জল্পনার জন্ম দিল।
[আরও পড়ুন: মমতার পালটা সভায় কার্যত ফাঁকা মাঠে ভাষণ যোগীর, হিন্দুত্ব ইস্যুতে বিঁধলেন তৃণমূল সুপ্রিমোকে]
ডালুবাবুর মন্তব্যের পর স্বাভাবিকভাবেই বাম-কংগ্রেস জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা শুরু করেছে। এ প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলছিলেন,”ডালুবাবু জেলার বর্ষীয়ান নেতা। তিনি কেন একথা বলেছেন জানি না। রাজ্যে বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফের (ISF) একটা জোট তৈরি হয়েছে। দিল্লির সবুজ সংকেত নিয়েই হয়েছে। বাম-কংগ্রেস এবং আইএসএফ যৌথভাবেই লড়বে।” এদিকে, তৃণমূল এবং কংগ্রেসের এই সম্ভাব্য জোটকে রীতিমতো কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু বলছেন,”এটা আমরা অনেক আগে থেকেই বলেছি। বিজেপিকে রুখতে একজোট তৃণমূল, বাম এবং কংগ্রেস। আমরা জানি, রাজ্যে ত্রিশঙ্কু পরিস্থিতি হলে ডালুবাবু, আলুবাবু সবাই তৃণমূলকে সমর্থন করবে।”