রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: ‘এই পবিত্র বঙ্গভূমিতে কেউ বহিরাগত নয়।’ কাঁথির সভায় দাঁড়িয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) জোর গলায় জবাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। প্রধানমন্ত্রীর সাফ কথা, “যে মাটিতে রাজা রামমোহন রায়, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, মাতঙ্গিনী হাজরা, নেতাজি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জন্মেছেন, সেই মাটিতে কেউ বহিরাগত হতে পারে না।” উল্লেখযোগ্যভাবে প্রধানমন্ত্রীর এদিনের বক্তব্যের সুর ছিল রুক্ষ। তাঁর কথার মধ্যেও ছিল বিরক্তির ভাব।
উল্লেখ্য, রাজ্যের ভোটের প্রচারাভিযানের একেবারে শুরু থেকে ‘বহিরাগত’ ইস্যুকে হাতিয়ার করেছিল তৃণমূল (TMC)। বাংলার ভোটের লড়াইকে ‘বাঙালি বনাম গুজরাটি’, ‘বাংলা বনাম দিল্লি’র লড়াই হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করছে তৃণমূল। মমতাকে ‘বাংলার মেয়ে’ এবং বিজেপি (BJP) শীর্ষনেতাদের বহিরাগত হিসেবে তুলে ধরার এই কৌশলেরই বহিঃপ্রকাশ শাসক দলের ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’ স্লোগান।কাঁথির সভা থেকে তৃণমূলের সেই অস্ত্র ভোঁতা করতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন মোদি। বলে দিলেন, “কবিগুরুর এই বাংলা কাউকে বহিরাগত মনে করে না।”
[আরও পড়ুন: ‘কবিগুরুর ভূমিতে কেউ বহিরাগত নয়’, মমতাকে কটাক্ষ মোদির]
সভামঞ্চ থেকে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) দৃপ্ত ঘোষণা,”যে মাটিতে দাঁড়িয়ে বন্দেমাতরম লিখে গোটা দেশকে একসুরে বেঁধেছিলেন বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, সেই মাটিতে কেউ বহিরাগত হতে পারে না। রাজা রামমোহন রায়, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ, মাতঙ্গিনী হাজরা, নেতাজি, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ভূমিতে কেউ বহিরাগত হতে পারে না। এরা সবাই এই বঙ্গভুমির সন্তান, ভারতভূমির সন্তান। এই ভূমিতে কেউ বহিরাগত নই। এখানে কোনও ভারতবাসী বহিরাগত নন।” মোদি বলছেন, “যে বাংলায় দাঁড়িয়ে কবিগুরু জাতীয় সংগীত রচনা করেছেন। দ্রাবিড় উৎকল বঙ্গ, বিন্ধ্য হিমাচল যমুনা গঙ্গাকে একত্রিত করার কথা বলেছেন। সেখানে কেউ বহিরাগত হতে পারে না। গুরুদেবের এই মাটি কাউকে বহিরাগত মনে করে না।” প্রধানমন্ত্রী বোঝানোর চেষ্টা করলেন, নিজের ১০ বছরের কাজের খতিয়ান দিতে না পেরে এখন অজুহাত দিচ্ছেন মমতা। আর এই ‘বহিরাগত’ ইস্যুও আসলে অজুহাত। মোদির প্রশ্ন, ”গত দশ বছরে কী কাজ করেছেন? তার হিসেব দিচ্ছেন না। কেউ হিসেব চাইলে তাঁকে গালি দিচ্ছেন কেন?” এদিন প্রধানমন্ত্রী আরও একবার ঘোষণা করেছেন, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হবেন কোনও ভূমিপুত্রই।