মণিশংকর চৌধুরী ও দীপঙ্কর মণ্ডল: রাত পোহালেই নন্দীগ্রামের (Nandigram) মেগা ফাইট। বাংলার রাজনীতি দাঁড়িয়ে আরও এক সন্ধিক্ষণে। নন্দীগ্রামের এই ভোটের ফলাফলই ঠিক করে দিতে পারে আগামী দিনের বঙ্গ রাজনীতির গতিপ্রকৃতি। স্বাভাবিকভাবেই এই কেন্দ্রের ভোট যাতে অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতে মরিয়া নির্বাচন কমিশন। নন্দীগ্রামে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে চেষ্টার কোনও কসুর করছেন না নির্বাচনী আধিকারিকরা।
Advertisement
নির্বাচন কমিশন (Election Commission) আগেই নন্দীগ্রামের ১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩৫৫টি বুথকে স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করেছিল। বেশ কিছু বুথকে শনাক্ত করা হয়েছে অতি স্পর্শকাতর হিসেবেও। এবার গোটা বিধানসভা জুড়ে জারি করা হল ১৪৪ ধারা। আজ অর্থাৎ বুধবার সন্ধে ৬টা থেকে আগামী শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত জারি থাকবে ১৪৪ ধারা। যার অর্থ, আজ রাত থেকে ভোটপর্ব মেটা না পর্যন্ত নন্দীগ্রামে কোনওরকম জমায়েত করা যাবে না। ৫ জনের বেশি একসঙ্গে থাকা যাবে না। দুটোর বেশি বাইক একসঙ্গে বেরোলে গ্রেপ্তার করা হবে। শুধু তাই নয়, কেবলমাত্র নন্দীগ্রামের নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এসপি পদমর্যাদার অফিসার নিয়োগ করেছে কমিশন। পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দুই দোর্দণ্ডপ্রতাপ পুলিশকর্তা প্রবীণ ত্রিপাঠী এবং নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। যারা পরিচিত কড়া মেজাজের জন্য। এখনও পর্যন্ত কমিশন সূত্রের খবর, সব মিলিয়ে মোট ২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ভোট পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। সেই সঙ্গে থাকবেন রাজ্য পুলিশের আধিকারিকরাও।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, কাঠগড়ায় বিজেপি, ভোটের আগে ফের উত্তপ্ত নন্দীগ্রাম]
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই অভিযোগ করেছেন, নন্দীগ্রামে এলাকায় বহিরাগতরা ঢুকে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। মমতার সেই অভিযোগকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বলেই কমিশন সূত্রের খবর। নন্দীগ্রামে ঢোকার চারটি প্রধান পথ চণ্ডীপুর, তল্লা, তেখালি এবং খেজুরির বটতলায় নাকা চেকিং করছে সিআরপিএফ। সন্দেহজনক ব্যক্তিদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তবে, এসবের মধ্যেও ফাঁকফোকর যে একেবারেই নেই, সেটা বলা যাচ্ছে না। নন্দীগ্রামে প্রবেশের একাধিক ছোট রাস্তা এখনও অরক্ষিত। তালপাটি খালের উপর প্রায় ৫০টি কালভার্ট আছে, যা দিয়ে এখনও অবাধেই প্রবেশ করা যাচ্ছে নন্দীগ্রামে। যা ভোটের আগে চিন্তার বিষয় তো বটেই।