বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: নন্দীগ্রামে ‘হাইভোল্টেজ ডার্বি’র পর একদিনের অবসর। ফের মাঠে নামছেন সিপিএমের (CPM) পোস্টার গার্ল মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। নন্দীগ্রামের ভোটপর্ব মিটতেই তাঁকে নিয়ে টানাটানি শুরু মোর্চা শিবিরে। প্রচারে নিয়ে যেতে আবেদনের পাহাড় জমছে আলিমুদ্দিনে। নন্দীগ্রামে শেষ করে শুরু করছেন সিঙ্গুর থেকে। সঙ্গতে পার্টির আরেক নেতা সুশান্ত ঘোষ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বিরুদ্ধে বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। লক্ষ্মীবারের ভোটের দিনলিপিতে ছিল প্রধান প্রতিপাদ্য বিষয়। সেখানে বাম জোটের প্রার্থী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ছিলেন ‘আন্ডারডগ’। শুরুতে প্রচারের আলো থেকে ছিলেন কয়েক যোজন দূরে। সময় যত গড়িয়েছে, ততই মীনাক্ষী (Minakshi Mukherjee) নিজেকে মেলে ধরেছেন। মূলত সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে। একটু একটু করে মানুষের কাছে পরিচিতি ঘটে বাকপটু হার না মানা এই বাম নেত্রীর। দুই মহারথীর মাঝে নন্দীগ্রামে নিজেকে মেলে ধরেন মীনাক্ষী। এখন রাজ্যের মানুষের মুখে মুখে তাঁর নাম। জমি আন্দোলনের পর নন্দীগ্রামে কার্যত প্রান্তিক দলে পরিণত হয় সিপিএম। ভোটের হিসাব করতে বসে ‘খেরোর খাতা’র শেষ পাতায় জায়গা পেত পার্টি। তখন মেরুকরণের রাজনীতির মাঝে কলকারখানা, বেকারত্ব, কর্মসংস্থানকে ইস্যু করে গুটিগুটি পায়ে ‘হাইভোল্টেজ’ নন্দীগ্রামের ভোটযুদ্ধের ময়দানে ক্রমশই নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে তোলেন মীনাক্ষী। অবশ্যই এর সঙ্গে ছিল অক্লান্ত পরিশ্রম। প্রখর রোদ উপেক্ষা করে বাড়ি বাড়ি ছুটে বেড়িয়েছেন। জনে জনে বুঝিয়েছেন মেরুকরণ নয়, জীবন-জীবিকার জন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান। তাঁর এই প্রচার ছুঁড়ে ফেলতে পারেননি অনেকেই। বিশ্বাস করেছেন তাঁকে। এবার তাঁর লড়াইয়ের রেশ ধরে রেখে রাজ্যের বাকি অংশে ছড়িয়ে দিতে চায় মোর্চা নেতৃত্ব। নতুন প্রজন্মকে ভোটের ময়দানে তুলে ধরার পর এবার মীনাক্ষীকে প্রচারের মুখ করতে উদ্যোগী বামেরা।
[আরও পড়ুন: যাদবপুর-JNU’কে পিছনে ফেলে দেশের সেরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, শুভেচ্ছা মুখ্যমন্ত্রীর]
ভোট পরবর্তী চব্বিশ ঘণ্টায় মীনাক্ষী দলের কর্মীদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। শনিবার সকালে সিঙ্গুরে জোটের বাম প্রার্থী ছাত্র সংগঠনের শীর্ষনেতা সৃজন ভট্টাচার্যর হয়ে মিছিল করেন মীনাক্ষী। তারপরেই ছুটে যান চণ্ডীতলায় পার্টির শীর্ষনেতা মহম্মদ সেলিমের জন্য ভোট চাইতে। বিকেলে মীনাক্ষী প্রচার ডায়মন্ড হারবারে ছাত্র সংগঠনের আরেক শীর্ষনেতা প্রতিকুর রহমানের সমর্থনে। সন্ধ্যায় যাদবপুরে। কার্যত আজ থেকে চরকিপাক শুরু মীনাক্ষীর। যদিও সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম (Md Selim) বলছেন, “আমরা দলগত লড়াইয়ে বিশ্বাস করি। নির্বাচন কোনও ব্যক্তিনির্ভর লড়াই নয়।” মীনাক্ষী জানান, এবার দল যা নির্দেশ দেবে, দায়িত্ব দেবে, তা পালন করার চেষ্টা করব ।
[আরও পড়ুন: ‘হারবে বুঝেই EVM বদলের চক্রান্ত করছে বিজেপি’, বিস্ফোরক অভিযোগ যশোবন্ত সিনহার]
শুধু বাম প্রার্থীরাই নন। তাঁকে প্রচারে নিয়ে যেতে আগেই বাম নেতাদের সঙ্গে কথা বলে রেখেছেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানও। মীনাক্ষীর পাশাপাশি সুশান্ত ঘোষকেও চাইছেন তিনি। ছোট বড় বাকি কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের নেতারা আলিমুদ্দিনের কাছে তদ্বির শুরু করেছেন। ফলে মোর্চার অনেকেই মনে করছেন আগামিদিনে মীনাক্ষীই বামেদের মুখ।