ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: আন্দোলনের নামে সমাজবিরোধী কার্যকলাপ এবং লুটতরাজ রুখতে কড়া রাজ্য সরকার। বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল ওয়েস্ট বেঙ্গল মেইনটেন্যান্স অফ পাবলিক অর্ডার (সংশোধনী) আইন ২০২৩ (West Bengal maintenance of public order act)। এই আইন অনুযায়ী, আন্দোলনের নামে বা অন্য কোনওভাবে কোনও সরকারি বা বেসরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে সেই ক্ষতি পূরণ করা হবে।
রাজ্য সরকারের আনা ওয়েস্ট বেঙ্গল মেইনটেন্যান্স অফ পাবলিক অর্ডার (সংশোধনী) আইনে বলা হচ্ছে, কোনও কিছু যদি লুট হয়, বা কোনও কিছু নষ্ট হয়, তাহলে যার সম্পত্তি নষ্ট হচ্ছে তাঁর ক্ষতিপূরণ পাওয়া উচিত। সে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট হোক বা বেসরকারি। নয়া আইন অনুযায়ী, এই ক্ষতিপূরণের জন্য অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার বিলটি বিধানসভায় পেশ করেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য (Chandrima Bhattacharya)। তিনি এই বিল সম্পর্কে বলেন, আজকাল বহু ধরনের সমাজবিরোধী কার্যকলাপ হয়। ভাঙচুর, লুট, চুরি, ধ্বংসাত্মক অনেককিছু করা হয়। এক্ষেত্রে মালিককে ক্ষতিপূরণ দেওয়া দরকার। সেটার জন্য আমরা অভিযুক্তের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে চাই। পাবলিক এবং প্রাইভেট দুটি সেক্টরের জন্য একই আইন প্রযোজ্য।
[আরও পড়ুন: ‘দরিদ্র নয়, ধনীদের উপর কর চাপান’, দেউলিয়া পাকিস্তানকে বার্তা IMF প্রধানের]
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে CAA বিরোধী বিক্ষোভের সময় উত্তরপ্রদেশেও এই একই ধরনের আইন পাশ হয়েছিল। সেসময় তৃণমূলই (TMC) সেই আইনের সমালোচনা করেছিল। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, সেই একই ধরনের আইন এবার রাজ্যে কেন? এ প্রসঙ্গে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য স্পষ্ট করে দিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) আইনের সঙ্গে এরাজ্যের আইনের বিস্তর ফারাক আছে। তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার চাইলেও যে কারও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে না। অভিযুক্তকে শনাক্ত করার পর ৬০ দিনের মধ্যে আদালরে আবেদন করা হবে। অন্তর্বতী রিপোর্ট ১৮০ দিনের মধ্যে দিতে হবে। তারপরে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।
[আরও পড়ুন: ‘অযোগ্য’দের চাকরি দিয়ে ১৬ কোটি তুলেছিলেন ‘সৎ রঞ্জন’, প্রাথমিকে নিয়োগ করেন মেয়েকেও]
চন্দ্রিমা স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এই ১৮০ দিনের মধ্যে যদি রাজ্য সরকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার কারণ প্রমাণ করতে না পারে, তাহলে বাজেয়াপ্ত সম্পত্তি ফেরত দেওয়া হবে। যার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে, তাঁকেও নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ দেওয়া হবে। সরকার ইচ্ছা হলেই কারও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করবে, তেমন নয়।