ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: হাতে আর মাত্র একমাস। ২৭ মার্চ থেকে বঙ্গে বিধানসভার ভোট শুরু হবে। কে, কোথায়, কোন দলের তরফে এই ভোটযুদ্ধে শামিল, এখনও তার চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করেনি কোনও রাজনৈতিক দলই। সাধারণত অন্যান্যবার ভোট ঘোষণার দিনই কয়েকঘণ্টার মধ্যে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে দেয় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল (TMC)। এবারই তা ব্যতিক্রম। শুক্রবার বাংলায় বিধানসভা ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশিত হলেও এখন তৃণমূল প্রার্থীদের নাম জানা যায়নি। অন্দরের গুঞ্জন, কারা এবার টিকিট পাচ্ছেন, তা তাঁরা নিজেরাও জানেন না। সূত্রের খবর, সোমবার তৃণমূলের নির্বাচনী কমিটি বৈঠকে বসছে তালিকা চূড়ান্ত করতে। আর তাতে মন্ত্রী, বিধায়করা সবাই এবার ভোটে লড়াইয়ের সুযোগ পাবেন কি না, তা নির্ধারণ করার ভার কিন্তু অনেকটাই কাউন্সিলরদের উপর। কোন কাউন্সিলর তাঁর নিজের বিধায়ককে কাজ এবং জনসংযোগের নিরিখে কত নম্বর দিচ্ছেন, সেই মার্কশিটের ভিত্তিতে প্রার্থী ঠিক করতে চলেছেন দলের ভোটকুশলী পিকে (Prashant Kishor)।
মন্ত্রী কিংবা বিধায়ক হিসেবে গত ৫ বছর ধরে দারুণ কাজ করেছেন? কোনও স্তরে কোনও অভিযোগ নেই? পারফরম্যান্স এতটা ভাল হলেই যে কেউ ২০২১এ নির্বাচনী লড়াইয়ে ঘাসফুল শিবিরের যোগ্য প্রার্থী হবেন, তা নাও হতে পারে। ঘাসফুল শিবিরের অন্দরের খবর এমনটাই। পিকে ‘স্যরে’র বিচারে বিধায়ক বা মন্ত্রী কতটা যোগ্য, তা ঠিক হবে কাউন্সিলরদের (Councillor) মতামতের ভিত্তিতে। একজন বিধায়কের তত্ত্বাবধানে যে ক’জন কাউন্সিলর কাজ করেন, তাঁদের থেকে রিপোর্ট নেওয়া হচ্ছে। তাতে কে কতটা নম্বর পাচ্ছেন, খতিয়ে দেখা হচ্ছে তা। যদি দেখা যায়, কাউন্সিলররা বিধায়কের কাজকর্ম, জনসংযোগ, আচার-ব্যবহার নিয়ে তেমন সন্তুষ্ট নন, সেক্ষেত্রে প্রার্থী তালিকার বাইরেই থাকতে হতে পারে সংশ্লিষ্ট বিধায়ককে। একুশের কঠিন লড়াইয়ের আগে এসবই গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে তৃণমূল প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে।
[আরও পড়ুন: ‘লুঠপাট-জাতপাতের নয়, বাংলায় চাই জনহিতের সরকার’, ব্রিগেড থেকে ‘বদলের’ ডাক ইয়েচুরির]
যদিও তালিকা নিয়ে এখনও আলোচনা চলছে। সোমবার নির্বাচন কমিটির বৈঠকে তা চূড়ান্ত হতে পারে। অন্দরের খবর, বিনোদন জগতের যে তারকারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থাকতে চেয়ে সদ্য তৃণমূলে যোগদান করেছেন, তাঁদের মধ্যে একটা বড় অংশই এবার তৃণমূল প্রার্থী হতে পারেন। বিশেষ নজর থাকবে দক্ষিণ কলকাতায়। উত্তর কলকাতার দুটি আসনে প্রার্থী রদবদল হতে পারে বলে খবর। আর এ বছর তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষিত হবে একেবারে নয়, দফায় দফায়। অর্থাৎ আগামী দু’-একদিনের মধ্যে প্রথম দফা বা ২৭ মার্চ যে তিরিশ কেন্দ্রে ভোট, সেই ৩০ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। ফলে প্রথম দফার ভোটে কারা প্রার্থী হচ্ছেন, আপাতত নজর সেদিকেই।