সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: রাত পোহালে যাবেন অমিত শাহ (Amit Shah)। তাই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার কাকদ্বীপের নারায়নপুরের সুব্রত বিশ্বাসের বাড়িতে ব্যস্ততা তুঙ্গে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আপ্যায়নে বিন্দুমাত্র ত্রুটি রাখতে রাজি নয় বিশ্বাস পরিবার।
একটা সময়ে বাবার হাত ধরে বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার (South 24 Parganas) কাকদ্বীপের নারায়নপুরে আসেন সুব্রত বিশ্বাস। কোনওরকমে থাকতেন ছোট্ট একটা ঘরে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার টাকায় ঘর তৈরি করেছেন। মাছ বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে স্ত্রী-মেয়েদের নিয়ে সংসার সুব্রতবাবুর। স্ত্রী অর্চনাদেবী একটি গেস্টহাউসে রান্নার কাজ করেন। চার মেয়ের তিনজনেরই বিয়ে দিয়েছেন বিশ্বাস দম্পতি। কন্যাশ্রীর সুবিধে পেয়ে একমাত্র অবিবাহিত কন্যা সীমা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছে। তাঁদের বাড়িতে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খেতে আসছেন শুনে প্রথমে কিছুটা দ্বিধায় পড়েছিলেন বিশ্বাস পরিবারের সদস্যরা। গৃহকর্তা সুব্রত বিশ্বাস জানান, “প্রথমে তো বিশ্বাসই হয়নি আমাদের ঘরে খাবেন দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী! কিভাবে আপ্যায়ন করব, কী খেতে দেব ভাবতে ভাবতেই কয়েকটা দিন কেটে গিয়েছে। তবে বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্ব আমাদের ভরসা জুগিয়েছেন। নিজেদের যেমন সামর্থ্য তেমন আয়োজনই করতে বলা হয়েছে। নিরামিষ খাবারের আয়োজন করা হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য।” কী কী থাকছে শাহি মেনুতে? জানা গিয়েছে, শাহের বৃহস্পতিবারের মেনুতে থাকবে ভাত, ডাল, রুটি, বেগুনভাজা, দু’রকমের সবজি, পাঁপড়, চাটনি, দই ও মিষ্টি। বুধবার সন্ধে থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়।
[আরও পড়ুন: স্ত্রীর সঙ্গে ‘পরকীয়ার শাস্তি’, প্রতিবেশী যুবক পিটিয়ে খুন করল স্বামী]
সুব্রতবাবুর স্ত্রী অর্চনাদেবী বলেন, “আমাদের মতো গরীবের বাড়িতে উনি খেতে আসছেন। একটু ভয় ভয় তো করবেই। কি জানি ঠিকমত আপ্যায়ন করতে পারব কিনা।” মেয়ে সীমা জানান, “দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে আসছেন। আমাদের বাড়িতে খাবেন। গর্ব তো হচ্ছেই।” আনন্দ-আতঙ্কের মাঝে বুধবার দিনভর নাজেহাল হচ্ছেন বিশ্বাস পরিবারের সদস্যরা। মাঝেমধ্যেই পুলিশ ও কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর আনাগোনায় ব্যতিব্যস্ত হওয়া আর ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে সংবাদমাধ্যমের নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে অত্যন্ত সাধারণ বিশ্বাস পরিবারের সদস্যদের। করতে হয়েছে কোভিড পরীক্ষাও। বিশ্বাস দম্পতির ইচ্ছা, সুযোগ পেলে নিজেদের অনটনের কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাবেন। যদিও এখনও কিছুটা দ্বিধায় রয়েছেন সুব্রতবাবু। বললেন, “দেখা যাক কী হয়! কতটা কি জানাতে পারি তাঁকে।”