স্টাফ রিপোর্টার, নয়াদিল্লি: একদিকে রাজ্যের প্রতি অসহযোগিতার অভিযোগ। অন্যদিকে নিজেদের রাজ্য সভাপতি ও বাংলার বিরোধী দলনেতার পালে হাওয়া দিতে দুই প্রকল্পে জোর দেওয়া। বাজেট পেশের(Budget 2024) দিন কার্যত এই দুই সুরই শোনা গেল রেলমন্ত্রী (Rail Minister) অশ্বিণী বৈষ্ণোর মুখে। পাশাপাশি, গত কয়েক বছরের ধারা বজায় রেখে এবারও রেল বাজেটে (Rail Budget) বাংলার জন্য বিশেষ কিছু জোটেনি।
নরেন্দ্র মোদি সরকারের (Narendra Modi Govt.) এক দশক শেষের অন্তর্বর্তী বাজেটে রেলের তরফে কী প্রাপ্তি বাংলার? এই উত্তর দিতে গিয়ে রেলমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল সেই চর্বিতচর্বণ! “রেলের প্রকল্প বাস্তবায়িত করতে হলে রাজ্য সরকারের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করার ক্ষেত্রে বাংলার সরকারের চরম অনীহা রয়েছে। সেই কারণেই বাংলায় থমকে রয়েছে রেলের নানা প্রকল্প।” অশ্বিণী বৈষ্ণোর বললেন, “নন্দীগ্রামের (Nandigram) রেল প্রকল্প ও বালুরঘাট থেকে দিল্লিতে সরাসরি ট্রেন চালুর জন্য রেলপথ বিস্তারের জন্য জমির প্রয়োজন। যা বাস্তবায়িত হলে লাভবান হবেন বাংলার মানুষই। অথচ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কিছুতেই এই কাজে সহযোগিতা করছে না।”
[আরও পড়ুন: টানাপোড়েনে ইতি, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ চম্পাই সোরেনের]
এদিন বাজেট পেশের পরেই রেলমন্ত্রী রাজ্যওয়াড়ি রেলের উন্নয়ন প্রকল্প ও বাজেট বরাদ্দ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন রেলভবনে। সেখানে মন্ত্রী দাবি করেন, ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের অন্তর্বর্তী বাজেটে পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) রেল প্রকল্পে ১৩,৮১০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। যা দশ বছর আগে বরাদ্দের তিন গুণ। স্থানীয় পণ্যের ১৫১টি স্টল তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্টেশনে। চলছে ৪০৬টি ফ্লাইওভারের কাজ। রাজ্যে অমৃত স্টেশনের আওতায় ৯৮টি রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণের কাজ চলছে। এর মাঝেই সামনে আসে রেল বাজেটের পিঙ্ক বুক। যেখানে দেখা যাচ্ছে, বরাদ্দের দিক থেকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বঞ্চিত বাংলা।
গত কয়েক বছরের মতো এবারও রাজ্যের একাধিক রেলপ্রকল্পে মাত্র ১০০০ টাকা করে বরাদ্দ করা হয়েছে। তারকেশ্বর-মগরা, তারকেশ্বর-ফুরফুরা শরিফ, বারুইপুর-মানাপুর ভায়া খড়গপুর, লছিমপুর-বারহাট, হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জে নতুন রেলপথ বা লাইন ডাবলিংয়ের জন্য মাত্র এক হাজার টাকা করে বরাদ্দ হয়েছে। হাবড়া-বনগাঁ-ফেস ১ এবং মছলন্দপুর-স্বরূপনগর, সোনারপুর-ক্যানিং এবং কালিকাপুর-মিনাখাঁ ভায়া ঘটকপুর রেল পথের মডিফিকেশনের জন্যও বরাদ্দ হয়েছে এক হাজার টাকা করে। লালগোলা-মণিগ্রাম, লালগোলা-জিয়াগঞ্জ ও সাইঁথিয়া-তারাপীঠ তৃতীয় লাইনের জন্যেও বরাদ্দের পরিমাণ মাত্র ১০০০ টাকা।
[আরও পড়ুন: বিমানে কিশোরীর সামনেই হস্তমৈথুন আমেরিকার ভারতীয় চিকিৎসকের! তারপর…]
একই অবস্থা কলকাতা মেট্রোরেলের (Kolkata Metro Railway) একাধিক প্রকল্পে। মহানায়ক উত্তম কুমার স্টেশনের তৃতীয় প্ল্যাটফর্মের জন্য বরাদ্দের পরিমাণ এক হাজার। কিছুটা ভদ্রস্থ অবস্থা দমদম-কবি সুভাষ ট্র্যাকের ডুয়াল ডিটেকশনে এএফটিসি-র কাজ। এর জন্য বরাদ্দ ৩০ লক্ষের কিছু বেশি। দমদম-টালিগঞ্জ গার্ড রেলের জন্য বরাদ্দ হয়েছে এক কোটি টাকা। মেট্রো রেলের সুড়ঙ্গ পুনর্বাসনে বাজেটে বরাদ্দ হয়েছে ৪ কোটি টাকা। দমদম এয়ারপোর্ট-নিউ গড়িয়া ভায়া রাজারহাট প্রকল্পে গত অর্থবর্ষে ১,২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এবার তা বেড়ে হয়েছে ১,৭০০ কোটি টাকা। বাকি সমস্ত প্রকল্পে হয় বরাদ্দ কমেছে নয়তো নামমাত্র টাকা দেওয়া হয়েছে।