সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে (Jagdeep Dhankhar) দুর্নীতিগ্রস্ত বলে অভিযোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জৈন হাওয়ালা কাণ্ডে ধনকড় অভিযুক্ত বলে দাবি করেছেন তিনি। সাংবাদিক সম্মেলন করে তাঁর অভিযোগ ওড়ালেন রাজ্যপাল। তাঁর দাবি, জৈন হাওয়ালার চার্জশিটে আমার নাম ছিল না। পাশাপাশি, মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যকে অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক বলেও দাবি করেন রাজ্যপাল।
সোমবার সন্ধেয় রাজভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ উড়িয়ে রাজ্যপাল বলেন, “জনগণের সামনে অসত্য তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। ওঁর মতো বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের কাছ থেকে এরকম মন্তব্য আশা করিনি। আমার নাম জৈন হাওয়ালা কাণ্ডের চার্জশিটে ছিল না। আমার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই।” তাঁর কথায়, “কখনও ভাবিনি মমতার মতো নেতা উত্তেজনা তৈরির জন্য এমন মন্তব্য করবেন।” এর পরই রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগের তির ছোঁড়েন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই মারাত্মক অভিযোগ আনলেন, তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন ধনকড়।
[আরও পড়ুন: অসুস্থ কবীর সুমনকে দেখতে হাসপাতালে ছুটে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়]
এদিন ধনকড় বলেন, “উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরার পরই বাজেট অধিবেশনে ভাষণের খসড়া পাই। দেখি, বহু অবাস্তব তথ্য রয়েছে সেখানে। সঙ্গে সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিই। উনি তার পরই ফোন করেন। বলেন, মন্ত্রিসভা খসড়া পাশ করেছে। আমার কিছু করার নেই। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি সাংবাদিক বৈঠক করে আমার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ করেন।” এর পরই উত্তরবঙ্গ, জিটিএ-এর অব্যবস্থা, দুর্নীতি নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্যে চলতে থাকা হিংসা নিয়েও রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাজ্যপাল।
জৈন হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে বলতে গিয়ে ধনকড় আরও বলেন, “চার্জশিটে যাদের নাম ছিল তারা বেকসুর খালাস পেয়েছিলেন। যশবন্ত সিনহা, অজিত পাঁজাদের নাম ছিল। পরে তাঁরাও অভিযোগ মুক্ত হন। আমার তো চার্জশিটে নাম ছিল না। যশবন্ত সিনহার কাছ থেকে উনি সঠিক তথ্য নিন।” পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমকে নিজেদের ভূমিকা পালনের আবেদনও জানান তিনি। রাজ্যপালের আরজি, সত্যিটা কী, আপনারা খুঁজে বের করুন। দয়া করে চুপ থাকবেন না। গণতন্ত্রে আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ‘উনি নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত’, হাওয়ালা জৈন কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে ধনকড়কে তোপ মমতার]
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে নিজের ছোট বোন বলেও উল্লেখ করে রাজ্যপাল। বলেন, “ভারতীয় সংস্কৃতিতে বোনের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা যায় না। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসত্য তথ্য দিলেও কোনও পদক্ষেপ করব না।” যদিও রাজ্যপালের মন্তব্যকেই অর্ধসত্য বলে দাবি করেছে তৃণমূল। সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়ের দাবি, “রাজ্যপাল সম্ভবত অর্ধসত্য বলেছেন। চার্জশিটে নাম ছিল না বলছেন, কিন্তু নাম জড়িয়েছিল কি না তা বললেন না।”