নব্যেন্দু হাজরা: গাড়িতেই বসানো ওজনযন্ত্র, আলো, রেশন ডিলারের বসার জায়গা, পাখা। পিছন দিক থেকে সাজানো একাধিক ডালা। তার কোনওটাতে থাকবে চাল, কোনওটাতে ডাল, কোনওটাতে গম। আপনার বাড়ি বাড়ি এই চাল-ডাল-গমের ডালা সাজিয়েই হাজির হবে বিশেষ ধরনের এই কাস্টমাইজড গাড়ি। ভাবছেন, সে আবার কী?
হ্যাঁ, দুয়ারে রেশন (Duare Ration) পৌঁছে দিতে তৈরি হচ্ছে নতুন ধরনের গাড়ি। যেহেতু পাহাড় থেকে জঙ্গলমহল সব এলাকার মানুষই দুয়ারে রেশনের সুবিধা পাবেন। তাই সব জায়গায় চলনসই গাড়ি তৈরির কথাই ভাবা হচ্ছে। বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছতে প্রত্যেক ডিলারকেই কিনতে হবে এই গাড়ি। আর এই গাড়ি কিনতেই রাজ্যের রেশন ডিলারদের এককালীন এক লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনা করছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি খাদ্যভবনে এ বিষয়ে একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানেই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। রাজ্যের প্রায় ২৩ হাজার রেশন ডিলারকে বাড়ি বাড়ি মাল পৌঁছনোর জন্য গাড়ি কিনতে এককালীন অর্থসাহায্য করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
[আরও পড়ুন: মুখে মদ ঢেলে সন্ন্যাসীর একাদশীর উপবাস ভঙ্গের অভিযোগ, রামপুরহাটের ঘটনার প্রতিবাদে সরব BJP]
নির্বাচনের (West Bengal Assembly Elections) আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ভোটে জিতলে তাঁর সরকার এবার রেশন পৌঁছে দেবে দুয়ারে। ঘরেই পৌঁছে যাবে চাল, আটা। দরজায় দরজায় চাল-গম-চিনি-সহ রেশনদ্রব্য পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এলাকার নির্দিষ্ট রেশন ডিলারের। এজন্য তাঁদের মালবাহী গাড়ি চাই, যাতে ওজনযন্ত্র বসানোরও সংস্থান থাকে, এবং যা শহরের এবং গ্রামের রাস্তায় চলাচলের উপযোগী। অলিগলিতেও ঢুকতে পারবে।
কিন্তু গাড়িগুলোর তো দাম যথেষ্ট! সব ডিলারের কি তা কেনার সামর্থ্য আছে? বিষয়টি নিয়ে গত সপ্তাহে খাদ্যশ্রী দিবসের দিন খাদ্য ভবনে বৈঠক হয়। ছিলেন তিনটি গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থার প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, সব সংস্থাই এই ধরনের গাড়ির জন্য ছয় থেকে সাড়ে ছয় লাখ টাকা দর দিয়েছে। তার মধ্যে এক লক্ষ টাকা সরকার দেবে বলেই ভাবা হচ্ছে। যে গাড়ির ডিলারের থেকে গাড়ি কিনবেন রেশন ডিলার তাঁর কাছেই সরাসরি এই টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যেমনটা দেওয়া হত গতিধারা প্রকল্পের সময়। তবে এ বিষয়ে বাস্তব পরিস্থিতিতে কী সমস্যা হতে পারে তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) চিঠি দিয়েছে রেশন ডিলারদের ফেডারেশন। তাঁদের বক্তব্য মূলত দু’প্রকার। প্রথমত ১ সেপ্টেম্বর ট্রায়াল দিতে বলা হয়েছে। ফলে হাতে সময় খুব কম। আর রেশন দেওয়ার এই গাড়িপিছু খরচ, সেটা বহন করবে কে? গাড়ি কেনার বাকি টাকাই বা জোগাবে কে? অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু বলেন, “আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে আমাদের সমস্যার কথা জানিয়েছি। তিনি যেদিন থেকে দুয়ারে রেশন প্রকল্পের সূচনা করতে চাইছেন সেই দিন থেকেই শুরু হবে। কিন্তু সমস্যাগুলোকে এড়াব কীভাবে?”