সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্যপালের হাতে রাখি বেঁধেছিলেন সন্দেশখালির নির্যাতিতারা। সেই ‘রাখিবোন’দের সুরক্ষা দিতে প্রস্তুত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবনে তৈরি হয়েছে ‘পিস রুম’। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মাকে পাশে নিয়ে আরও একবার সে কথা জানালেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। একইসঙ্গে পুলিশকেও তাঁদের ভূমিকা মনে করালেন রেখা শর্মা। একইসঙ্গে অভিযোগ করলেন, “রাজনৈতিক দলগুলির মদতে সন্দেশখালিতে গুন্ডারাজ চলছে।”
সরেজমিনে সন্দেশখালির পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন রাজ্যপাল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে এদিন একটি রিপোর্ট কার্ড প্রকাশ করেন সিভি আনন্দ বোস। যেখানে নারী নির্যাতনে কথা মেনে নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এর পাশাপাশি সেখানকার মহিলাদের জন্য মিশন ‘সন্তোষ কালী’ শুরু করছেন বলে জানালেন এদিন। যার মূল কথা, উত্তর ২৪ পরগনার ছোট্ট দ্বীপ সন্দেশখালির মহিলাদের স্বনির্ভর করা। নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সেখানকার মেয়েদের আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এদিকে রাজ্যপালের রিপোর্ট কার্ডের পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লিখেছেন, “এই রিপোর্ট সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন। পুরোপুরি বিজেপির কণ্ঠ প্রতিফলিত হয়েছে রিপোর্টে।”
সোমবার সন্দেশখালি থেকে ফিরে রাজভবনে যান রেখা শর্মা। রাজ্যপালের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করেন তাঁরা। যেখানে পিস রুমের কথা জানানো হয়। রাজভবনের অন্দরেই তৈরি হয়েছে আশ্রয়। যেখানে সন্দেশখালির ‘নির্যাতিতা’আশ্রয় দেওয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বোস বলেন, “ওঁরা আমাকে বোন বলেন। বোনেদের জন্য় আমার দরজা সবসময় খোলা। ওদের সুরক্ষা দিতে আমি বদ্ধপরিকর।” সন্দেশখালি বিষয়টি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানান রাজ্যপাল। তাঁর কথায়, “বিষয়টি নিয়ে সাংবিধানিক সহকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তবে কী কথা হচ্ছে, তা এখনই প্রকাশ্যে আনা যাবে না।”
[আরও পড়ুন: বিরিয়ানির বদলে জিরা রাইস! গ্রাহক-কর্মী অশান্তিতে ধুন্ধুমার রেস্তরাঁয়]
সন্দেশখালিতে রাষ্ট্রপতি শাসন চেয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরা। কিন্তু তাতে যে রাজ্যপাল কর্ণপাত করছেন না, তাও এদিন ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিলেন। বললেন, “রাজভবন সংঘাতের জায়গা নয়। সন্দেশখালির মতো ঘটনায় কোনও রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীর তৈরি ন্যারেটিভ নিয়ে ভাবিত নয়। এটা আমার কর্তব্য যা হয়েছে এবং আমার কাছে যা তুলে ধরা হয়েছে, তা পূর্ববর্তী ধারনার বশবর্তী না হয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো। রাজভবনের মূল উদ্দেশ্য রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা এবং কল্যাণ নিশ্চিত করা।”
তবে সন্দেশখালিতে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে সরব হয়েছেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। তাঁর অভিযোগ, “রাজনৈতিক দলগুলির মদতে সন্দেশখালিতে গুন্ডারাজ চলছে। পুলিশকে মনে করিয়ে দিতে চাই, শপথ নেওয়ার সময় তাঁরা কী বলেছিলেন। পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে চাইলেও রাজনৈতিক দলগুলি সেটা হতে দিচ্ছে না।”