ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: হাসপাতালের রেফার রোগ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে ভুড়ি ভুড়ি। তা নিয়ে অতিষ্ঠ রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তর। বেশ কয়েকদিন আগে বৈঠক করে রাজ্যের প্রত্যেকটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে রেফার রোগ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা সত্ত্বেও রেফার রোগ সারছে কই? অভিযোগ বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এবার এই সমস্যা সমাধানে আরও কড়া স্বাস্থ্যভবন। রাজ্যের প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। কোন কোন রোগীদের রেফার করা যাবে, আর কোন ক্ষেত্রে করা যাবে না তা ওই নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।
নির্দেশিকায় মোট ৩৬২টি ক্যাটেগরি নির্দিষ্ট করা হয়েছে। কালিম্পং থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যেকটি জেলা হাসপাতালে ওই চিকিৎসাগুলি করতেই হবে। চিকিৎসা পরিকাঠামো থাকতেই পারে আবার না-ও পারে। তবে পরিকাঠামো থাকলে কোনওভাবেই ফেরানো যাবে না। যদি একান্তই চিকিৎসা পরিষেবা না থাকে তবেই অন্য কোনও হাসপাতালে রেফার করা যাবে।
[আরও পড়ুন: ‘আপত্তি থাকলে বিধানসভায় বিল আনুন’, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান বিতর্কে মমতাকে পরামর্শ দিলীপের]
উল্লেখ্য, অতীতে সমীক্ষায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যের মোট ৯০টি হাসপাতাল (Hospital) রেফার রোগে ভুগছে। ওই হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে অভিযোগ, উপযুক্ত পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও রোগীদের বিনা চিকিৎসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। ৩৯টি হাসপাতালকে চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে ৭ শতাংশেরও বেশি রোগীকে রেফার করা হচ্ছে। ৫০টি হাসপাতালকে ‘পেশেন্ট লিভিং এগেইনস্ট মেডিক্যাল অ্যাডভাইস’ বা LAMA’র আওতাভুক্ত করা হয়েছে। যেখানে ৩ শতাংশের বেশি রোগী ফেরানো হচ্ছে।
সমীক্ষায় পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রাজ্যের প্রত্যেকটি সরকারি, মহকুমা হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজের সুপার, সিএমওএইচদের কড়া চিঠি দেয় স্বাস্থ্যদপ্তর। ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, হাসপাতালে আসা রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করা আবশ্যিক। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত অন্য কোনও হাসপাতালে স্থানান্তর করা যাবে না। কোন হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেন রোগীর পরিজনেরা, তা প্রেসক্রিপশনে উল্লেখ করতে হবে। ওই হাসপাতালে আদৌ বেড এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত পরিকাঠামো রয়েছে কিনা, তা আগে থেকে জেনে তবেই রেফার করা যাবে। যদি উপযুক্ত ব্যবস্থা না থাকে, তবে ওই হাসপাতালে তাঁকে আর রেফার করা যাবে না। তারপরেও রেফার রোগ না সারায় এবার নির্দেশিকা জারি করল স্বাস্থ্যদপ্তর।