সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তরুণ ব্রিগেডের হাত ধরে খরা কাটাবে। এই আশাতেই লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে একঝাঁক তরুণ নেতাকে বেছে নিয়েছিল বামেরা। কিন্তু সৃজন-সায়ন-দীপ্সিতাদের হাত ধরেও শূন্যের গেরো কাটল না। ২০১৯-এর পর ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও বাম সেই শূন্যেই। নতুন প্রজন্মও আশার আলো দেখাতে পারল না লালশিবিরকে। বাংলা আরও একবার 'প্রত্যাখ্যান' করল বামেদের।
গত লোকসভা নির্বাচনেই (West Bengal Lok Sabha Result 2024) বাংলা বামশূন্য হয়ে গিয়েছিল। এই ভরাডুবির কারণ নিয়ে বিস্তর কাটাছেঁড়া হয় দলের অন্দরে। কোথায় ত্রুটি, কেন মানুষ মুখ ফিরিয়েছে তা বোঝার চেষ্টা করেছিল দল। পরবর্তীতে সেই ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে ২০২৪-এর নির্বাচনে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বামেরা। কীভাবে মানুষের কাছে পৌঁছনো যায়, সেই কথা মাথায় রেখে রণকৌশল ঠিক করেছিল দল। পক্ককেশের পাশাপাশি তরুণ বিগ্রেডের উপর ভরসা করেছিল আলিমুদ্দিন। সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীক-উর রহমান, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপ্সিতা ধরের মতো একঝাঁক তরুণ মুখকে প্রার্থী করেছিল বামশিবির। জায়গা বদল করে যাদবপুরের প্রাক্তন সাংসদ সুজন চক্রবর্তীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল দমদমে। একাধিক নতুন মুখকে প্রার্থী করা হয়েছিল। সেই তালিকায় ছিলেন অভিনেতা দেবদূত ঘোষও। প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বামেদের তরুণ ব্রিগেড। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ, কেন্দ্রের একাধিক নীতিকে প্রচারে অস্ত্র করেছিলেন তাঁরা। লক্ষ্য ছিল, নতুন করে আমজনতার আস্থা অর্জন। কিন্তু সর্বশক্তি দিয়ে লড়াইয়ের পরও ফল মিলল না। ভোট বাক্সে একেবারে 'শূন্য' বামেরা।
[আরও পড়ুন: জনতার এথিক্স কমিটিতে ‘বহিষ্কার’ ফিরল ‘পুরস্কার’ হয়ে, লড়াই করে সংসদের রুদ্ধপথ খুললেন মহুয়া]
বুথফেরত অধিকাংশ সমীক্ষা বলেছিল, চব্বিশের ভোটেও বামেদের শূন্যস্থান পূরণ হবে না, অন্তত বাংলায়। কিন্তু এই সমীক্ষা ফুৎকারে উড়িয়েছিল লালশিবির। সকলেই দাবি করেছিলেন, এই সমীক্ষার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই। তৃণমূল-বিজেপির ক্ষেত্রে ফল না মিললেও, বামেদের ফল কিন্তু একেবারে মিলে গেল। বামেদের ঝুলিতে শূন্য। আসন পাওয়া তো দূর্-অস্ত, যে কয়েকজন প্রার্থীর উপর বাড়তি ভরসা ছিল দলের, তাঁরাও তৃতীয় স্থানে। তবে বর্ষীয়ান বাম নেতা মহম্মদ সেলিম একমাত্র দ্বিতীয় স্থানে। যাদবপুর আসনে সৃজন ভট্টাচার্য ১ লক্ষের বেশি ভোট পেয়েছেন। দমদম থেকে সুজন চক্রবর্তীও পেয়েছেন ১ লক্ষের বেশি ভোট। কিন্তু প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে তৃতীয় স্থানে তাঁরা। অর্থাৎ সংসদে এবারও বাংলা থেকে বামেদের কোনও প্রতিনিধি থাকছে না। কিন্তু রণকৌশল বদল, প্রার্থী তালিকায় নতুন মুখ তুলে ধরার পরও কেন হারানো বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে পারছে না বামেরা, সেটাই এখনও ভাবাচ্ছে দলকে।