shono
Advertisement

নতুন অভিজ্ঞতা! ‘ওপেন বুক সিস্টেমে’প্রথমদিন নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিলেন রাজ্যের কলেজ পড়ুয়ারা

পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ভালই, জানালেন শিক্ষামন্ত্রী। The post নতুন অভিজ্ঞতা! ‘ওপেন বুক সিস্টেমে’ প্রথমদিন নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিলেন রাজ্যের কলেজ পড়ুয়ারা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:53 PM Oct 01, 2020Updated: 09:53 PM Oct 01, 2020

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: করোনা (Covid-19) আবহে মার্চ মাসের শেষের দিক থেকেই বন্ধ পঠনপাঠন। খোলেনি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। পরবর্তীতে অনলাইনে ক্লাস শুরু হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পিছিয়ে গিয়েছে একাধিক পরীক্ষা। শেষপর্যন্ত আনলক পর্যায়ে অনলাইনে ওপেন বুক সিস্টেমে পরীক্ষার (Online Examination) বিষয়ে চূড়ান্ত সিলমোহর পড়ে। রাজ্যের কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানায়, এভাবেই নেওয়া হবে এবারের পরীক্ষা। আর বৃহস্পতিবার অনলাইন পদ্ধতিতে ‘ওপেন বুক সিস্টেমে’ পরীক্ষার প্রথম দিন প্রায় নির্বিঘ্নেই কাটল।

Advertisement

এদিন রাজ্যের সমস্ত কলেজ–বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে শুরু হয়েছে স্নাতক–স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত পরীক্ষা। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রশ্ন পেয়ে ছাত্রছাত্রীরা বাড়িতে বসেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা লিখে অনলাইনে পাঠিয়েছেন। পাশাপাশি সর্বত্র অফলাইনে খাতা জমা নেওয়ারও ব্যবস্থা ছিল। যদিও খুব কম সংখ্যক পড়ুয়াই কলেজে গিয়ে খাতা জমা দিয়েছেন। সংখ্যাগরিষ্ঠ ছাত্রছাত্রী অনলাইনেই উত্তরপত্র পাঠিয়েছেন।

[আরও পড়ুন: ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে বেআইনি লেনদেন, পাণ্ডার খোঁজে ধৃতদের নিয়ে পাটনা যাচ্ছে পুলিশ]

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষার জন্য বরাদ্দ সময় ২ ঘন্টা। প্রশ্নপত্র ডাউনলোড এবং উত্তরপত্র আপলোডের জন্য ৩০ মিনিট করে অতিরিক্ত সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়েরই (Calcutta University) অধীনে সুন্দরবনের কিছু পড়ুয়া কলেজের কাছাকাছি বন্ধুদের বাড়িতে বা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছেন। মূলত ইন্টারনেটের গতি কম থাকার কারণে বাড়ি থেকে তাঁরা এত দূরে এসে পরীক্ষা দিচ্ছেন।

এদিকে, বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক গৌতম কুন্ডু জানিয়েছেন, তাঁরা অনলাইন এবং অফলাইন দুটি উপায়েই খাতা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তবে সবাই অনলাইনে উত্তরপত্র পাঠিয়েছেন। দিনের শেষে প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‌‘‌পড়ুয়াদের নিরাপত্তার জন্য এই ব্যবস্থা। খোঁজ নিয়ে দেখেছি পরীক্ষায় উপস্থিতির হার খুব ভাল। কোথাও তেমন কোনও অভিযোগ পাওয়া যায়নি।’‌’‌

[আরও পড়ুন: করোনার বলি ইন্দাসের বিধায়ক গুরুপদ মেটে, টুইটে শোকপ্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী]

কলকাতার আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজে দূরের জেলার কয়েকজন ছাত্রছাত্রী ক্লাসরুমে বসে সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রেখে পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই পালটা সাফাইও দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, মালদা, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রত্যন্ত এলাকায় ইন্টারনেটের সমস্যা থাকায় ছাত্রছাত্রীরা এসে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে পরীক্ষা দিয়েছে।

জেলাতেও পড়ুয়ারা প্রায় প্রত্যেকেই সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা দিয়েছেন। এদিন থেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলির পড়ুয়াদের পরীক্ষাগ্রহণও শুরু হয়েছে। বাড়ি থেকেই অনলাইনে পরীক্ষা দিয়েছেন বেশিরভাগ পড়ুয়া। তবে যাঁদের ইন্টারনেট বা মোবাইল সেট সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিতে পরীক্ষাগ্রহণের ব্যবস্থা করা হয় বলে জানা গিয়েছে। বীরভূম জেলার বোলপুর কলেজ, পূর্ণিদেবী মহিলা মহাবিদ্যালয়–সহ বেশ কয়েকটি কলেজে এই পরীক্ষা নেওয়া হয়। শিক্ষকদের সামনে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেয়। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, অনেক গ্রামে ইন্টারনেট নেই। আবার অনেক ছাত্রছাত্রী এতটাই দুঃস্থ পরিবারের যে তাঁদের অনলাইন পরীক্ষা দেওয়ার মত পরিকাঠামো বা স্মার্টফোন নেই। তাই তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা। সমাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

[আরও পড়ুন: ‘টেন্ডার না পেয়ে কাজে বাধা দিলে কড়া শাস্তি’, শিলিগুড়িতে ‘পথশ্রী’র সূচনায় হুঁশিয়ারি মমতার]

এসবের মধ্যে ব্যতিক্রমও র‌য়েছে। অ্যান্ড্রয়েড বা স্মার্ট ফোন না থাকায় এবার পরীক্ষা দিতে পারলেন না সুমিত্রা নামে এক আদিবাসী ছাত্রী। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষ ব্লকের রূপসা গ্রামে বাড়ি তাঁর। বাবা নেই। মা দিনমজুরি করেন। সুমিত্রাও মায়ের সঙ্গে কাজ করেন। কিন্তু চূড়ান্ত বর্ষে এসে ষষ্ঠ সেমেস্টারের পরীক্ষায় বসতে পারলেন না।

সুমিত্রা জানান, করোনার কারণে স্কুল–কলেজ বন্ধ ছিল। মাঝে একদিন কলেজে এসে কবে ফর্ম ফিল–আপ বা পরীক্ষা হবে জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তখন কিছু জানানো হয়নি। এদিকে, ফর্ম ফিলআপের দিন পেরিয়ে গেলেও জানতে পারেননি। বুধবার পরীক্ষার কথা জানতে পেরে কলেজে ছুটে এসেছিলেন। তাও কোনও সুরাহা হয়নি। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‌‘‌সমস্যার কথা ফর্ম ফিল আপের আগে জানালে ব্যবস্থা নেওয়া যেত। পরীক্ষার দিন সেটা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিমাইচন্দ্র সাহা সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘‌‘‌কলেজই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু করার নেই।’ তা ওই ছাত্রীকে জানানোও হয়েছে।’‌’‌ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ‘‌‘‌পড়ুয়াদের কথা ভেবে যাঁদের সমস্যা রয়েছে তাঁদের জন্য কলেজে বসে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছিল।’‌’‌

The post নতুন অভিজ্ঞতা! ‘ওপেন বুক সিস্টেমে’ প্রথমদিন নির্বিঘ্নেই পরীক্ষা দিলেন রাজ্যের কলেজ পড়ুয়ারা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement