গোবিন্দ রায়: প্রায় রাতারাতিই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Election) দামামা বেজেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। আর শুক্রবার থেকে শুরু মনোনয়ন (Nomination)। চলবে ১৫ জুন পর্যন্ত। কিন্তু এই কয়েকটা দিন মাত্র মনোনয়ন জমা দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়। এই সংক্রান্ত বিরোধীদের এক মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta HC)।
শুক্রবার অধীর চৌধুরী, শুভেন্দু অধিকারীদের মামলায় প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ৯ থেকে ১৫ জুন, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট নয়। এই সময়সীমা বাড়ানো যায় কিনা, তা নিয়ে কমিশনের (State Election Commission) দিকেই বল ঠেলে দিল আদালত। জেলা শাসক এবং জেলা বিচারকদের কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া যেতে পারে কিনা, আগামী সোমবার জানাবে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এছাড়া পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী (Central Force) মোতায়েনের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান জানাতে হবে বলেও নির্দেশ প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের। আগামী সোমবার এই মামলার শুনানি।
[আরও পড়ুন: ‘যিনি আপনাকে মন্ত্রী বানিয়েছেন…’, রাহুলের মন্তব্য নিয়ে প্রশ্ন তোলায় জয়শংকরকে তোপ কংগ্রেসের]
এদিন কংগ্রেস, বিজেপির তরফে শুনানিতে সওয়াল করা হয়, এত অল্প সময়ের মধ্যে ৭৫ হাজার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া অসম্ভব। একদিনে নির্বাচন নিয়ে যদিও তাদের কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু রাজ্যের পুলিশ দিয়ে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে হলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন রয়েছে। শেষ পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দেখা গিয়েছিল, সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। রাজ্য নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার ভোটের দিন ঘোষণা করার পর আজ থেকেই মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এত অল্প সময়ে কীভাবে তা সম্ভব? এই প্রশ্ন তুলে অনলাইন মনোনয়ন জমার সুবিধা দেওয়ার দাবি তোলেন তাঁরা।
এতে প্রধান বিচারপতির বক্তব্য, আদালত চায় অবাধ, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। কোনও অশান্তির পরিবেশে যাতে নির্বাচন না হয়, নিশ্চিত করবে কমিশন। পাশাপাশি প্রার্থী এবং ভোটারের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। বিজেপির দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে নির্বাচন চাই। সিসিটিভি ক্যামেরা বসাতে হবে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে এবং বুথে। কেন্দ্রীয় বাহিনী না দিলে ভোট কর্মীরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বলেও আদালতে জানায় বিজেপি। অনলাইন মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
[আরও পড়ুন: ‘বড্ড কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি’, কাজলের ‘কালো পোস্টে’ তোলপাড় বলিউড]
এতে বিচারপতির বক্তব্য, প্রযুক্তি এত উন্নত হয়েছে, কত দ্রুত কাজ হয়। ৭৫হাজার মনোনয়ন পত্র এত অল্প সময়ের মধ্যে সশরীরে হাজির হয়ে জমা দিতে সমস্যা হতে পারে। তাই আদালত প্রাথমিক ভাবে মনে করছে, অনলাইনের মাধ্যমে যদি মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করা যায় তাহলে ভাল হয়। আগামী সোমবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে এনিয়ে মতামত জানানোর কথা।