দীপঙ্কর মণ্ডল: শর্তসাপেক্ষে আপাতত অনশন প্রত্যাহার করলেন পার্শ্বশিক্ষকরা। তাঁদের দাবি যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে সমাধান করতে রাজ্য সরকারকে ৩ মাস সময় বেঁধে দিলেন অনশনকারীরা। আজকের পর তাঁরা যে যার বাড়ি ফিরে যাবেন, যোগ দেবেন কাজে। তিন মাসের মধ্যে দাবিপূরণ না হলে ফের বৃহত্তর আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
যদিও পার্শ্বশিক্ষক ঐক্যমঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক ভগীরথ ঘোষ বলেন, ”আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করিনি। স্থগিত রাখলাম। শিক্ষামন্ত্রী কথা দিয়েছেন যে উনি আমাদের দাবিগুলো ভেবে দেখবেন। উনি নিজের কথা না রাখলে ফের আমরা নামব।” আজ বিকেলে অনশন প্রত্যাহারের পর অনশনস্থলেই নিজেদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁরা।
[ আরও পড়ুন: আচার্যের ক্ষমতা খর্বের বিধি পেশের পরই উপাচার্য-শিক্ষামন্ত্রী বৈঠকের প্রস্তুতি, তুঙ্গে জল্পনা]
বেতন কাঠামো বৃদ্ধি, পূর্ণ সময়ের শিক্ষকের সম্মান প্রদান-সহ একাধিক দাবিতে গত ১১ নভেম্বর থেকে সল্টলেকে বিকাশ ভবন অর্থাৎ শিক্ষা দপ্তরের সামনে ধরনা কর্মসূচি শুরু করেন রাজ্যের পার্শ্বশিক্ষকরা। ১৪ তারিখ থেকে শুরু হয় অনশন। টানা অনশনের জেরে মেদিনীপুরের এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়। বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভরতি হন। এসব সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনওরকম আশ্বাস না পাওয়ায় তাঁরাও নিজেদের অবস্থান অনড় থাকেন। শিক্ষামন্ত্রীর আলোচনায় বসার আবেদন জানিয়ে চিঠি লেখেন।
সেইমতো বুধবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সেদিন কোনও প্রতিশ্রুতি ছাড়াই তাঁদের ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী স্পষ্ট করেই জানান যে দাবিগুলি উঠেছে পার্শ্বশিক্ষকদের তরফে, তার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলেচনা করে তাঁর অনুমতি প্রয়োজন। তাছাড়া কোনও আশ্বাস দেওয়া সম্ভব নয়। তবে এই দাবিগুলো নিয়ে ভেবে দেখার মতো ইতিবাচক কথাও বলেছিলেন।
[ আরও পড়ুন: কংগ্রেসের CAB বিরোধী মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার, স্তব্ধ চাঁদনি চক]
এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য দীর্ঘ একমাস ধরে স্কুলে ক্লাস নিচ্ছিলেন না পার্শ্বশিক্ষকরা। শিক্ষামন্ত্রী সেসময় একবার তাঁদের অনশন তুলে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। তাতে কাজ না হওয়ায় বেশ কড়া বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন যে শোকজ নোটিস পাঠানো হবে। এমনকী বেশ কয়েকজন পার্শ্বশিক্ষক শোকজে চিঠিও হাতে পেয়েছিলেন। প্রথমে ৩৭ জন মিলে অনশন শুরু করলেও, শেষ পর্যায়ে সংখ্যাটা কমে দাঁড়িয়েছিল তেইশে। আন্দোলনকারীরা নিজেরাও নানা সমস্যায় পড়ছিলেন। এই পরিস্থিতিতে শিক্ষামন্ত্রীর কথায় ভরসা না রেখে কার্যত উপায় ছিল না। সে কারণেই অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত। তবে তাঁরা এও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী মার্চের মধ্যে তাঁদের দাবি নিয়ে রাজ্য সরকার কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ না নিলে ফের বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে।
The post ডেডলাইন মার্চ, শর্ত দিয়ে মাসখানেকের মাথায় অনশন তুললেন পার্শ্বশিক্ষকরা appeared first on Sangbad Pratidin.