সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দূরে বদলির প্রতিবাদে বিকাশ ভবনের (Bikash Bhaban) সামনে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু অঘটনের বদলে চিকিৎসকদের নিরলস পরিশ্রম তাঁদের ঠিক জীবনের পথেই ফিরিয়ে দিচ্ছে। সূত্রের খবর, এনআরএস (NRS)হাসপাতালে ভরতি হওয়া ২ শিক্ষিকা ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পুতুল মণ্ডল নামে এক শিক্ষিকার অবস্থা সংকটজনক ছিল। ভেন্টিলেশন থেকে তাঁকে বের করে জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হচ্ছে। অপরজনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার কথা আজই।
ঘটনার সূত্রপাত সেই ১৮ আগস্ট। শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের (SSK) ৫ শিক্ষিকাকে বহু দূরে বদলির জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কলকাতা কিংবা উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার শিশুশিক্ষা কেন্দ্র থেকে সরিয়ে তাঁদের উত্তরবঙ্গে বদলি করে শিক্ষাদপ্তর। যদিও নিয়ম অনুযায়ী, এই কাজে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্থানীয় এলাকার কেন্দ্রগুলিতেই নিয়োগ করা হয়। বদলি করলেও ওই এলাকার মধ্যেই তা করতে হয়। কিন্তু গত ১৮ তারিখের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, ৫ শিক্ষিকাকে সম্পূর্ণ অন্য প্রান্তে বদলি করা হয়েছে। যেমন মৃত পুতুল মণ্ডলকেই দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানা (Namkhana) থেকে কোচবিহারের দিনহাটায় (Dinata) বদলি করা হয়েছিল। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন তাঁরা। শিক্ষাদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহারের আবেদন জানিয়েও লাভ না হওয়ায় তাঁরা বিকাশ ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন।
[আরও পড়ুন: মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিকের পর এবার কাটছাঁট রাজ্যের প্রথম থেকে নবম শ্রেণির সিলেবাসেও]
এরপর ২৪ আগস্ট আন্দোলনরত ওই ৫ শিক্ষিকা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বিকাশ ভবনের সামনেই। পুলিশ দ্রুত সকলকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করে। পুতুল মণ্ডল-সহ ২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের এনআরএস হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এঁদের মধ্যে পুতুল মণ্ডলের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তাঁকে ভেন্টিলেশনে রেখে চিকিৎসকরা প্রাণপণ চেষ্টা করেন, তাঁকে সুস্থ করে তোলার। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোরও শুরু হয়। এঁদের বিরুদ্ধেই আইনভঙ্গের অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিশ। অন্যদিকে, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhkari) নিজে একদিন পুতুল মণ্ডলকে দেখতে এনআরএসে যান এবং সেখান থেকে বেরিয়ে রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতির সমালোচনাও করেন।
[আরও পড়ুন: ফের মতবদল! ভবানীপুরে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থী দেবে না কংগ্রেস, সিদ্ধান্ত AICC’র]
চিকিৎসকদের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই শিক্ষিকা। সূত্রের খবর, বুধবার আইনজীবীকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলানো হতে পারে। একজনকে এদিন ছেড়েও দেওয়া হবে। তবে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ফেরার পর তাঁদের বড়সড় আইনি শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে। গ্রেপ্তার হতে পারেন তাঁরা।