অংশুপ্রতিম পাল, খড়্গপুর: ডেবরা। আপাত দৃষ্টিতে বঙ্গের বিশাল ভোটরঙ্গে এই ‘অখ্যাত’ আসনটির দিকে ততটা ফোকাস থাকার কথা নয়। গুরুত্বের নিরিখে এই কেন্দ্র এর আগে কোনওদিনই রাজ্যের প্রথম সারির আসনগুলির মধ্যে পরিগণিত হয়নি। কিন্তু বিজেপির (BJP) প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পর এই ডেবরা কেন্দ্রই এখন রাজ্যের হেভিওয়েট কেন্দ্রগুলির মধ্যে একটি। কারণ, এই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন বিজেপির হেভিওয়েট নেত্রী তথা রাজ্যের প্রাক্তন পুলিশকর্তা ভারতী ঘোষ। শাসক শিবির অবশ্য আগেই এক প্রাক্তন আইপিএস হুমায়ুন কবীরকে (Humayun Kabir) প্রার্থী করেছে। অর্থাৎ, পশ্চিম মেদিনীপুরের এই অখ্যাত আসনটিতে এবারে লড়াই রাজ্যের দুই দুঁদে প্রাক্তন পুলিশকর্তার।
প্রথমে আসা যাক শাসকদলের প্রার্থী হুমায়ুন কবীরের কথায়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) স্নেহধন্য এই আইপিএস সদ্যই চাকরিজীবন থেকে অবসর নিয়ে রাজ্যের শাসকদলে যোগ দিয়েছেন। আর রাজনৈতিক জীবনের শুরুতেই তাঁকে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। হুমায়ুনবাবু আসলে ডেবরার ভূমিপুত্র হলেও, সেভাবে কোনওদিন ডেবরায় থাকা হয়নি তাঁর। তাই নিজেকে ডেবরার ভূমিপুত্র হিসেবে সেভাবে এখনও মেলে ধরতে পারেননি হুমায়ুনবাবু। দলেও সমস্যা কম নেই। এলাকায় তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ব্যাপক। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জন্যই বর্তমান বিধায়ক সেলিমা খাতুনকে প্রার্থী করেনি শাসকদল। স্বভাবিকভাবেই অসন্তোষ রয়েছে শাসকদলের কর্মীদের একাংশের মধ্যেও। সুতরাং প্রাক্তন পুলিশকর্তার লড়াই কঠিন হতে চলেছে।
[আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে শুভেন্দু বনাম মমতা, বিজেপির প্রথম দু’দফার প্রার্থী তালিকায় একাধিক চমক]
হুমায়ুনবাবুর প্রতিদ্বন্দ্বী আবার এই ডেবরাকে চেনেন নিজের হাতের তালুর মতোই। আসলে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ঘাটালের প্রার্থী ছিলেন ভারতী (Bharati Ghosh)। সেসময় এই এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করেছেন। আবার পুলিশ আধিকারিক থাকাকালীনও ডেবরায় কাজ করেছেন ভারতী। গোটা এলাকায় তাঁর অবাধ বিচরণ। এলাকায় সব গ্রামেই রয়েছে ভারতীদেবীর পরিচিত মানুষ।সর্বোপরি, লোকসভা নির্বাচনে এই ডেবরা কেন্দ্রে ৪ হাজার ২৩৯ ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। তবে, তাতে ভয় পাচ্ছেন না তৃণমূল প্রার্থী হুমায়ুন কবীর। তিনি বলছেন, “খেলা হবে। কেউ জিতবে, কেউ হারবে। তবে খেলাটা হোক গণতান্ত্রিকভাবে।”