প্রণব সরকার, আগরতলা: নৈশ কারফিউ ভেঙে বিয়েবাড়িতে পার্টি চলার অভিযোগে জেলাশাসকের অভিযানের ঘটনায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তদন্তের জন্য দুই সদস্যের কমিটি গঠনও করে সরকার। এবার নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে নিজের পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব।
[আরও পড়ুন: এবার নাইট্রোজেন প্লান্টেই তৈরি হবে অক্সিজেন, করোনা নিয়ে মোদির বৈঠকে বড় সিদ্ধান্ত]
কয়েকদিন আগে নৈশ কারফিউ অমান্য করে মধ্যরাত পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান করায় ত্রিপুরায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল দু’টি বিয়েবাড়ি। এর মধ্যে ‘মাণিক্য কোর্ট’ নামে একটি বিয়ে বাড়ির মালিক রাজপরিবারের সদস্য মহারাজ প্রদ্যুত কিশোর দেববর্মন। ওই অভিযান চলিয়েছিলেন জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব। সেখানে গিয়ে পুরোহিত-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দেন। ছিঁড়ে ফেলেন বিয়ের অনুমোদন পত্র। বিয়ের অনুমোদনে ৫০ জনকে নিয়ে রাত ১০টার আগে বিয়ে শেষ করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সেই আদেশই মানা হয়নি। এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে যান জেলা শাসক শৈলেশ কুমার যাদব। মারধরও করা হয় কয়েকজনকে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার পর এক বছরের জন্য দু’টি বিয়ে বাড়ি সিল করে দেওয়া হয়। অতিথিদের উপর বলপ্রয়োগের অভিযোগও ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে।
ওই ঘটনা ঘিরে শহরে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। সমালোচনার মুখে পড়ে ক্ষমাও চেয়ে নেন জেলাশাসক। বলে রাখা ভাল, ত্রিপুরায় এমনিতেই করোনা পরিস্থিতি যথেষ্ট উদ্বেগজনক। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ এড়াতে নেগেটিভ রিপোর্ট ছাড়া রাজ্যে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এহেন অবস্থায় নৈশ কারফিউ চলাকালীন মধ্যরাত পর্যন্ত বিয়ের অনুষ্ঠান ঘিরে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন অনেকেই। ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডাঃ শঙ্কর রায় জেলাশাসকের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যদিও জেলাশাসকের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ির অভিযোগ করে নেটিজেনরা। সামাজিক মাধ্যমেও বয়ে যায় সমালোচনার ঝড়। তবে জেলাশাসকের অভিযানের আগেই বিয়ে সম্পন্ন হয়। ফলে লগ্নভ্রষ্টা হতে হয়নি কন্যাকে। এই জেলাশাসক শৈলেশ কুমার যাদব জানিয়েছিলেন যে, জেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। বার বার আবেদন করা সত্বেও নৈশ কারফিউ ভেঙে মধ্যরাত পর্যন্ত চলছিল বিয়ের পার্টি। কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া উপায় ছিল না।