সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষার ২ টি মামলা হাতছাড়া হয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Gangopadhyay)। শুক্রবার দিনভর সুপ্রিম কোর্টে টানাপোড়েনের পর সন্ধের দিকে তা স্পষ্ট হয়। শীর্ষ আদালতের এই রায়ের পর বিচারপতি কার্যত কটাক্ষের সুরেই প্রতিক্রিয়া দেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যুগ যুগ জিও’। গভীর রাতে বাড়ি ফিরে অবশ্য মনখারাপ চেপে রাখতে পারেননি। বাড়ির সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘আজ আমার মৃত্যুদিন।’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের হাত থেকে ২ টি মামলা সরিয়ে নেওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা প্রতিক্রিয়া। বিজেপি (BJP), কংগ্রেসের (Congress) নেতারা বলছে নানা কথা।
শনিবার সকালে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) বলেন, ”উনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কী বলেছেন, কতটা বলেছেন, কী বলা উচিত ছিল, তা নিয়ে তদন্ত চলতেই পারত। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ তো মেনে নিতেই হবে। মাসখানেক ধরে বাজারে রিউমার চলছিল, ওনার হাত থেকে মামলা কেড়ে নেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত যেটা নিয়ে টেনশন ছিল, সেটাই হল। মানুষ যাঁর উপর ভরসা রেখেছিল, যাঁকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে একজোট হতে শুরু করেছিল, তাঁদের মনোবল কমে যাবে। চাকরিপ্রার্থীদের কাছে এটা বড় ধাক্কা।” কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) কথায়, ”যতই মামলা থেকে সরুন, উনি আন্দোলনকারী ও বাংলার অগণিত মানুষের কাছে হিরো হয়েই থাকবেন।”
[আরও পডুন: ‘আজ আমার মৃত্যুদিন’, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘অভিমানী’ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়]
অধীর চৌধুরীর কথা অনেকাংশেই সত্যি। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরই ‘অভিজিৎ স্যরকে চাই’ – এই দাবিতে পোস্টার নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন আন্দোলনকারীদের একটা বড় অংশ। তাঁদের মতে, যে দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুবিচার পাইয়ে দেওয়ার পথে হাঁটছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়, তা তুলনাহীন। তাঁকে ঘিরে যাবতীয় আশা-ভরসা তৈরি হয়েছিল। তাই নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নিষ্পত্তির জন্য তাঁকেই ফের চাই।
[আরও পডুন: বিতর্কিত সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়? কুণালই বা প্রশ্ন তোলেন কী নিয়ে?]
এনিয়ে অবশ্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, ”মামলা তো আর বন্ধ হল না। অন্য কোনও বিচারপতির এজলাসে মামলা হবে। আমি যদি ৬ মাসে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাই, আর অন্য বিচারপতির যদি ৬০ বছর লাগে, তাহলে কিছু বলার নেই।” শনিবার থেকে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ফের একই চেয়ারে আবার দেখা যাবে বলেই আশ্বস্ত করেছেন তিনি। তবে মামলা হাতছাড়া হওয়ায় যে যথেষ্ট ধাক্কা খেয়েছেন তিনি, তা কথাবার্তাতেই স্পষ্ট।