রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: লাগাতার সিবিআইয়ের সমালোচনা করায় দিল্লির ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছিল। সেই চাপে পড়ে এবার সিবিআই (CBI)নিয়ে নিজের অবস্থান থেকে সরলেন মেদিনীপুরের সাংসদ। শুক্রবার অনুব্রত মণ্ডল সিবিআই আদালতের বিচারককে হুমকি চিঠি প্রসঙ্গে তদন্তের কথা বলা প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh) প্রশ্ন করা হয়, ”তাহলে কি আপনার ভরসা এল সিবিআইতে?” তাতে দিলীপ ঘোষের জবাব, ”এছাড়া আর উপায় কী? আমাদের পোস্ট পোল ভায়োলেন্সের পর সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। যে দুর্নীতি নিয়ে চিন্তিত ছিলাম, তার তদন্ত হচ্ছে, এটাই বড় কথা।”
এর আগে পরপর ২ দিন সিবিআই তদন্তের উপর অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য ছিল, সিবিআইতে ভরসা নেই, ইডি তার চেয়ে অনেক ভরসাযোগ্য। তাঁর অভিযোগ ছিল, সিবিআইকে বাংলায় ‘সেটিং’ করা হয়েছে। তা বুঝেই যথাযথ তদন্তের জন্য ইডিকে পাঠানো হয়েছে। এরপরই দিল্লি থেকে তাঁর এহেন মন্তব্যের জন্য রিপোর্ট চাওয়া হয়। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা তাঁকে সতর্ক করেন। তাতেই সম্ভবত সিবিআইয়ের প্রতি নিজের আস্থা ফেরার কথা বললেন দিলীপ ঘোষ।
[আরও পড়ুন: ‘বলিউডে শুধু স্টার রয়েছে, দক্ষিণেই আসল সিনেমা তৈরি হয়’, বিস্ফোরক অনুপম খের]
শুক্রবার সকালে ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। শরীরচর্চার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সিবিআই ছাড়াও একাধিক বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। তার মধ্যে অন্যতম ছিল দুর্গাপুজোয় রাজ্য সরকারের অনুদান। তাতে তাঁর সাফ কথা, ”তৃণমূল যখন জন্মায়নি, তখন কি পুজো হতো না? তৃণমূল যখন টাকা দেয়নি, তখন কি পুজোর টাকা উঠত না? আমি বলব, যাদের স্বাভিমান আছে, তারা কেউ এই অনুদান নেবেন না। এটা পাপের টাকা। শর্ত, দিদির ছবি লাগাতে হবে। নীল-সাদা রং করতে হবে।” তাঁর এই মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব পুজো উদ্যোক্তা এবং শাসকদল তৃণমূল।
[আরও পড়ুন: সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় এবার নাম জুড়ল নাড্ডা-রাজনাথ-স্মৃতি ইরানিদেরও! চাপে বিজেপি]
এর আগেও তিনি পুজোয় রাজ্য সরকারি অনুদান নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, ”লীলা-খেলা-মেলা করেই রাজ্যের মানুষকে দুর্নীতি থেকে সরিয়ে রাখা যায়। দৃষ্টি সরানোর জন্য এসব অনুদান, পুজোর আয়োজন।” সেবার তৃণমূলের তরফে রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন পালটা জবাব দিয়ে বলেন, ”ইউনেস্কোর এত বড় একটা সম্মান আমরা উদযাপন করতে চলেছি। তাতে রাজ্য সরকার সাহায্য করলে ওঁর কী সমস্যা হচ্ছে? আসলে, ওঁরা কোনও ইতিবাচক বিষয় দেখতে পারেন না, গাত্রদাহ হয়।” এবার অনুদানের অর্থকে ‘পাপের টাকা’ বলে বিতর্ক আরও বাড়ালেন দিলীপ ঘোষ।