শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ৫০০ বছরে ফের বদল। কাঠামো পুজোর আগেই জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়ির রথের চাকা বদলে গেল। এই রথেই দেবীর আগমন ও বিসর্জন হয়। জানা যাচ্ছে, রথের একটি চাকা বসে যাওয়ায় দেবীর কাঠামো পুজোর আগেই তা বদলে ফেললেন রাজ পরিবারের সদস্যরা। রাজ পরিবারের দাবি, পাঁচশো বছরের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় পরিবর্তন। ইতিহাস বলছে, প্রায় সত্তর বছর আগেও একবার রথের একটি চাকা বদলে ফেলা হয়েছিল।
জলপাইগুড়ির বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ির পুজো এই বছর ৫১৫ বছরে পা দিল। মঙ্গলবার কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে দুর্গাপুজোর (Durga Puja) সূচনা হয়ে গেল রাজবাড়িতে। উপস্থিত ছিলেন রাজ পরিবারের সদস্যরা। ইতিহাস গবেষকদের বক্তব্য, বৈকন্ঠপুরের রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর সঙ্গে রথ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িয়ে রয়েছে। রাজবাড়ির পুজোর সূচনা করে ছিলেন শিষ্য সিংহ ও বিশ্ব সিংহ দুই ভাই। পরবর্তীতে শিষ্য সিংহ বৈকন্ঠপুর ও বিশ্ব সিংহ কোচবিহারের রাজা হন। গবেষক উমেশ শর্মা জানান, বৈকন্ঠপুরের রাজবাড়ির প্রতিমা তৈরি হয় রথের (Rath) উপর। ৫০০ বছরের পুরনো কাঠের তৈরি এই টানা রথ। এই রথের উপরের পুজিত হন দেবী দুর্গা। পুজো শেষে এই রথে করেই বিসর্জন হয় দেবী প্রতিমার।
[আরও পড়ুন: কাটল জট, উচ্চ প্রাথমিকে ১৪ হাজার পদে শিক্ষক নিয়োগে সবুজ সংকেত হাই কোর্টের]
জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) বৈকুন্ঠপুর রাজ পরিবারের সদস্য প্রণতকুমার বসু জানান, সারা বছর এই রথটি রাজ বাড়ির দুর্গা মণ্ডপেই থাকে। প্রতি বছর টুকিটাকি সংস্কারের কাজ করা হয়। সত্তর বছর আগে একবার রথের চাকা বদল করা হয়েছিল। সেই হিসেব ধরে এটি দ্বিতীয় চাকা বদল। সোমবার রাতে অষ্টমীর পুজো শেষে রথের ক্ষতিগ্রস্ত চাকা বদলে নতুন কাঠের চাকা লাগানো হয়।
[আরও পড়ুন: ‘ধর্ষণ বিরোধী আইন পাশ করাব, রাজ্যপাল সই না করলে রাজভবন ঘেরাও’, হুঁশিয়ারি মমতার]
রাজবাড়ির কুল পুরোহিত শিবু ঘোষালের কথায়, ''সংস্কার হওয়া রথেই মঙ্গলবার কাঠামো পুজো হয়েছে। পারিবারিক নিয়ম মেনে কাদা খেলা শেষে সেই কাদা রেখে দেওয়া হয়েছে প্রতিমা নির্মাণ কাজের জন্য।'' জানা গিয়েছে, দিন কয়েকের মধ্যে রাজবাড়ির দুর্গা মণ্ডপেই প্রতিমা নির্মাণ কাজ শুরু করে দেবেন মৃৎশিল্পীরা।
কাদা খেলার পর সেই মাটি রেখে দেওয়া হয় প্রতিমা নির্মাণের জন্য। নিজস্ব চিত্র।