সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শুটিংয়ের মাঝে অক্ষয় কুমারের (Akshay Kumar) সঙ্গে নিজের তুলনা সহ্য করতে পারেননি টোটা রায়চৌধুরী (Tota Roy Choudhury)। জেদের বশে বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ করে ফেলেছিলেন। পুরোনো সেই দিনের কথা জানালেন রবিবারের সকালে।
পুরনো ফাইল পরিষ্কার করতে গিয়ে ‘নাচ নাগিনী নাচ রে’ সিনেমার একটি ছবি খুঁজে পান টোটা। অঞ্জন চৌধুরী পরিচালিত ছবির কোরিওগ্রাফার ছিলেন মুম্বইয়ের ওমপ্রকাশ। মজাদার, হাসিখুশি মানুষ নন তিনি। কিন্তু আচমকা টোটাকে নায়িকা চুমকি চৌধুরীর মাথার উপর দিয়ে গোলকিপারের মত ডাইভ্ মেরে শরীরটা শূন্যে ভাসিয়ে দিয়ে হাতের উপর পড়েই ডিগবাজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। দ্বিধায় ছিলেন টোটা। পরিচালক সেদিন সেটে ছিলেন না। তাঁর সহকারীরা ওমপ্রকাশের প্রস্তাবে ছিলেন নিমরাজি।
[আরও পড়ুন: ‘কারচুপি করে সিদ্ধার্থকে ‘বিগ বস’ জেতানো হয়েছিল’, বেফাঁস মন্তব্যে বিপাকে আসিম রিয়াজ]
এমন পরিস্থিতিতে ওমপ্রকাশ বলে বসেন, “থাক, এসব এখানে কেউ করতে পারবে না। এটা অক্ষয় কুমার হলে এক কথায় করে দিত।” এতেই জেদ চেপে যায় টোটার। বাঙালি পারে এমন কোনও কাজ নেই। তাই সকলের বারণ সত্ত্বেও শটটি দেন অভিনেতা। ওমপ্রকাশ প্রথম শটের পরই এসে টোটাকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন পারফেক্ট। কিন্তু টোটা নিজের উদ্যোগে আবার শট দেন। বহু বছর বাদে বিমানবন্দরে ওমপ্রকাশ টোটাকে দেখেই জড়িয়ে ধরেন। টোটাকে দেখিয়ে সহকারীদের বলেন, “ইয়ে দেখ, বঙ্গাল কা অক্ষয় কুমার।” সে সময় অবশ্য প্রশংসায় বিব্রতই হয়েছিলেন টলিউডের তারকা।
এই কাহিনি জানিয়েই টোটা লেখেন, “না সত্যিই! অক্ষয় কুমার তো বহুদূর, টলি কুমারও হতে পারিনি। পরিকল্পনায় এবং পি.আর.-এ অবশ্যই খামতি ছিল কিন্ত পরিশ্রমে ও প্রয়াসে, সততা – অতীতেও ছিল, অধুনাও আছে এবং আজীবনই থাকবে।” স্টান্ট দৃশ্যায়নের সময়ে অভিনেতাদের সুরক্ষা ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাপনায় উদাসীনতা নিয়ে আক্ষেপ প্রকাশ করেন টোটা। এরপরই সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের কাজের প্যাশন নিয়ে তুমুল প্রশংসা করেন।
পরিচালক সৃজিতের কথা বলতে গিয়েই টোটা লেখেন, “কদাচিৎ সমগোত্রীয় সহ-উন্মাদের পাল্লায় পড়তে হয় (পড়ুন: সৃজিত মুখোপাধ্যায়) যিনি, স্টান্টম্যান তৈরি থাকা সত্ত্বেও, আমাকেই আদেশ করবেন যে খাদে লাফ মারতে হবে। আর শুধু লাফ মারলেই চলবে না, মাথাটা খাদের দিকে করে পড়তে হবে এবং পড়েই ক্যামেরার দিকে মুখ ঘুরিয়ে, ঝোপের উপর দিয়ে উলটো ডিগবাজি খেয়ে, ঠিক গড়িয়ে পড়ার প্রাক্ মুহূর্তে খপ্ করে ডালপালাগুলো খামচে ধরে ঝুলে থাকতে হবে এবং সেটা গোটা সাত-আষ্টেকবার বার করতে হবে যাতে পর্বত, বন ও অন্তরীক্ষ থেকে নানান অ্যাঙ্গেলে শটগুলো নেওয়া যায়। এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিগুলোতে পুরনো বিদ্যেটা বড়ই কাজে আসে। তবে শটগুলো মনোমত হবার পর পরিচালক যখন শিশুর মত হাততালি দিয়ে ওঠেন, তখন চোট, আঘাত বা রক্তপাত সব সার্থক বলেই মনে হয় এবং সেই মুহূর্তে খুবই জীবন্ত অনুভব করি।”