অর্ণব আইচ: লাল ঝান্ডা বোঝায় সংগ্রাম। বয়ে নিয়ে আসে আগুন জ্বালা প্রতিবাদী স্বর। আর সফেদ ঝান্ডা দেয় শান্তি, আশ্বাস, নিরাপত্তা ও ভরসা। তুমুল সংঘাতের মাঝেও তা দেয় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কিছুটা সময়। এবার জাতি দাঙ্গায় রক্তস্নাত মণিপুরে আতঙ্কিত মানুষকে ভরসা জোগাচ্ছে সেই ‘সফেদ ঝান্ডা’।
৩ মে থেকেই মণিপুরে সংখ্যাগুরু মেতেই জনজাতির সঙ্গে রক্তাক্ত সংঘাত চলছে কুকি-ঝোমি ও অন্য আদিবাসীদের। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন পঞ্চাশ জনেরও বেশি মানুষ। বেশকিছু এলাকায় বন্ধ ইন্টারনেট। বিরোধীদের চাপ ও সমালোচনার মুখে মৌনব্রত ভেঙেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। তাঁর বক্তব্য, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষের কাছে তাঁর আহ্বান, সকলে শান্তি বজায় রাখুন। তবে এখনও উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে জাতি দাঙ্গার আগুন ধিকি ধিকি জ্বলছে। এহেন পরিস্থিতিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে সফেদ ঝান্ডা হাতে তুলে নিয়েছে এইচ ওয়াজাং নামের একটি গ্রাম।
[আরও পড়ুন: প্রাক্তন প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক, রাগের বশে ইট দিয়ে সহকর্মীর মাথা থেঁতলে খুন!]
মণিপুরের কাকচিং জেলার পাল্লেলের কাছেই এইচ ওয়াজাং গ্রাম। কুকি-মেতেই সংঘাতে সেখানেও ছড়িয়েছে আতঙ্ক। তবে সাদা পতাকা টাঙিয়ে ওই গ্রাম শান্তির বার্তা দিচ্ছে। এই ‘হোয়াইট ফ্ল্যাগ ইনিশিয়েটিভে’র অন্তর্গত মেতেই ও কুকিদের মধ্যে একাধিক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। দু’পক্ষই হিংসা বন্ধ করে শান্তি ফেরানোর পক্ষে। অত্যন্ত লক্ষণীয় ভাবে, এহেন পদক্ষেপের পুর থেকেই পাল্লেল ও আশপাাশের অঞ্চলে সেই অর্থে হিংসার কোনও বড়সড় ঘটনা ঘটেনি। ফলে রাজ্যের অন্যান্য অঞ্চলেও এইচ ওয়াজাং গ্রামকে উদাহরণ হিসেবে রেখে শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছে সেনা ও প্রশাসন।
উল্লেখ্য, রাজ্য ও কেন্দ্রকে প্রতিবাদী বার্তা দিতেই ৩ মে ‘ট্রাইবাল সলিডারিটি মার্চ’ শুরু করে ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’। মেতেইদের তফসিলি উপজাতির তকমা না দেওয়ার দাবিতেই ছিল এই মিছিল। ক্রমেই তা হিংসাত্মক আকার ধারণ করে। মেতেই সংখ্যাগুরু ইম্ফল উপত্যকায় বেশকিছু বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এর প্রতিক্রিয়াও হয় প্রায় সঙ্গে সঙ্গে। গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ে হিংসা।