সন্দীপ্তা ভঞ্জ: পুজোয় মুক্তি পাচ্ছে চার-চারটে বাংলা ছবি। কিন্তু মূল সমস্যা,কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছে না প্রেক্ষাগৃহ। বুধবার তৃণমূল সাংসদ দেব বাংলা সিনেমার এই শোচনীয় পরিস্থিতির কথা তুলে ধরে একটি টুইট করেছিলেন। আর বৃহস্পতিবার দেবকে সেই টুইটের পালটা দিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।
[আরও পড়ুন: ‘বাংলা সিনেমাকে বাঁচান’, পুজোয় বাংলা ছবি হল না পাওয়ায় আরজি দেবের ]
প্রসঙ্গত, বাংলা ছবির জন্য সেভাবে স্লট না পাওয়ায় বুধবার উষ্মা প্রকাশ করে দেব প্রেক্ষাগৃহ কর্তৃপক্ষদের উদ্দেশে বলেছিলেন, “রাজ্যের সিনেমা হল মালিকদের বলি, হিন্দি ছবির থেকে বেশি নয় অন্তত সমান সুযোগ আমাদের দিন। লড়াইটা অন্তত সমানে সমানে হোক। বাংলাকে বাঁচাতে হলে, বাঙালিকে বাঁচাতে হলে, বাংলা সিনেমাকে বাঁচাতেই হবে।” বাংলা সিনেমার পাশে দাঁড়ানোর আরজি জানিয়েছেন অভিনেতা। তৃণমূল সাংসদের এই টুইটের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন তিনি নিজে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন। প্রয়োজনে হল মালিকদের সঙ্গেও মিটিংও করবেন। আর বাংলা সিনেমা প্রেক্ষাগৃহ না পাওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের বিষয়টি উত্থাপন করেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এদিন সাংবাদিক বৈঠকে একহাত নেন তাঁকে।
“কেন শাসকদলের রক্তচক্ষু দেখে একটি সিনেমা বন্ধ হয়ে যাবে!”
বাবুল বলেন, “কোন হলে কোন ছবি চলবে সেটা একজন মুখ্যমন্ত্রী ঠিক করবেন কেন? আর তিনি যদি ঠিক করেন, তাহলে তো বুঝতেই পারছেন, যারা সেই দলের কোনও দাদার ঘনিষ্ঠ, শুধুমাত্র তারাই বেশি সংখ্যক হল এবং শো পাবেন। আর বাকিরা, যারা তৃণমূল ঘনিষ্ঠ নন, তাঁদের সিনেমাগুলি কী হবে? প্রশ্ন তোলেন গেরুয়া শিবিরের নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।” উল্লেখ্য, সিনেমা হল না পাওয়া প্রসঙ্গে বাবুল বামমনস্ক অনীক দত্তের ‘ভবিষ্যতের ভূত’ ছবিটির কথাও তুলে ধরেন। তাঁর কথায়, “কেন শাসকদলের রক্তচক্ষু দেখে একটি সিনেমা বন্ধ হয়ে যাবে!” বৃহস্পতিবার রাজ্যের গেরুয়া শিবিরের তরফে টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জন্য ‘খোলা হাওয়া’ নামে একটি নতুন ফোরাম তৈরি করা হয়। উপস্থিত ছিলেন, বাবুল সুপ্রিয়-সহ অঞ্জনা বসু, অনিন্দ্য পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌরভ, মৌমিতা গুপ্ত এবং রিমি সেনের মতো বিজেপির তারকা সদস্যরা। সেখানেই টলিউডের তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ আনেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ইম্পা নির্বাচনে ধুয়েমুছে সাফ গেরুয়া শিবির, বাজিমাত তৃণমূলের]
কোনও দলের নাম না করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “কেন শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট দলঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলির থেকেই লোক নিতে হবে? বিদেশে শুটিং করতে গেলে কেন এখান থেকেই টেকনিশিয়ান-ক্যামেরাম্যান নিয়ে যেতে হবে। যাদের অনেকেরই বিদেশে গিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা নেই। এতে খরচও অনেক বেশি হয়। উপরন্তু, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ সংগঠনগুলির গাড়ির অবস্থা শোচনীয় হলেও কেন তাদের গাড়িই ভাড়া নিতে হয়, বলিউড বা দক্ষিণের ইন্ডাস্ট্রিতে কিন্তু এরকম হয় না। একমাত্র এই রাজ্যের বিনোদন ইন্ডাস্ট্রিতেই হয়”, মন্তব্য বাবুলের। ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কমিটির প্রেসিডেন্ট পদ থেকে প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজনৈতিক মতপার্থক্যের জেরেই, একথাও বলেন বাবুল।
উল্লেখ্য, বুধবার ইম্পা নির্বাচনে ২১টির মধ্যে একটি আসনও জিততে পারেনি বিজেপি। ইম্পা প্রসঙ্গে বাবুলের বক্তব্য, আমাদের মধ্যে উপস্থিত কেউই ইম্পা নির্বাচনে দাঁড়াতে চান না। অন্যদিকে, বাংলা সিনেমার হল না পাওয়া নিয়ে তৃণমূল সাংসদ দেব এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগকে ভূয়সী প্রশংসা জানিয়েছেন টলিউড পরিচালকরা।
The post ‘কোন হলে কী ছবি চলবে মুখ্যমন্ত্রী কেন ঠিক করবেন?’, দেবের টুইটের পালটা বাবুলের appeared first on Sangbad Pratidin.