কৃশানু মজুমদার: কাতার বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ইতিহাসে নাম লেখালেন সৌদি আরবের গোলকিপার মহম্মদ আল-ওয়াইস। শেষ ৩৬ ম্যাচে অপরাজিত থাকা আর্জেন্টিনাকে দুরমুশ করে দিল সৌদি আরব। আর্জেন্টিনার একঝাঁক আক্রমণ সামলে ম্যাচের সেরা হয়ে গেলেন ওয়াইস। রাতারাতি মরুদেশের ‘নায়ক’ হয়ে উঠলেন ৩১ বছরের তারকা।
সৌদি আরবের নামী ক্লাব আল হিলালে খেলেন ওয়াইস। এর আগে আল শাবাব ও আল আহলিতেও খেলেছেন তিনি। ২০১৮ বিশ্বকাপে সৌদির প্রাথমিক দলে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। সেবার উরুগুয়ের বিরুদ্ধে ম্যাচে খেলেন ওয়াইস। আর এবার প্রথম ম্যাচেই চমকে দিলেন গোটা দুনিয়াকে।
তাঁর খেলায় মুগ্ধ ভারতীয় দলের প্রাক্তন অধিনায়ক অতনু ভট্টাচার্য। বলছিলেন, “ওর খেলা দেখে নিজেদের খেলার কথা মনে পড়ে গেল। উঁচু বলের অ্যাডভান্টেজ নিতাম আমরাও। হাইলাইনার ডিফেন্সের ক্ষেত্রে গোলকিপারকে ডি-এর উপর দাঁড়িয়ে খেলতে হয়। ওয়াইসও সেটা করেছে। ম্যান মার্কিং করে খেলেছে সৌদি। আর্জেন্টিনাকে খুব ভাল ট্যাকেল করেছে ডিফেন্ডাররা।”
[আরও পড়ুন: ‘বড় ধাক্কা খেলাম, তবে হাল ছাড়ছি না’, অপ্রত্যাশিত হারের পর প্রত্যয়ী বার্তা মেসির]
এরই সুর প্রাক্তন ভারতীয় গোলকিপার সন্দীপ নন্দীর গলায়। এদিন সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালকে জানান, “আজকের ফলাফলটা এশিয়া ফুটবলের জন্য অত্যন্ত ভাল একটা খবর। কারণ লাতিন আমেরিকার একটা দলকে হারাতে পেয়েছে এশিয়ার দল। তবে আর্জেন্টিনার ভাগ্যও খারাপ ছিল। তিনটে গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়েছে। বড় দলের বিরুদ্ধে গোলকিপাররা ভাল পারফর্ম করারই চেষ্টা করে। ভাল খেলায় ওয়াইস ম্যাচের সেরাও হয়েছে। তাছাড়া হাইলাইনার ডিফেন্সের ক্ষেত্রে গোলকিপারের ভূমিকা আরও বেড়ে যায়। কারণ তাকে তখন সুইপারের দক্ষতাও দেখাতে হয়। বক্সের লাইন ছেড়ে খেলতে হয়। এক্ষেত্রে ওয়াইস খুব ভাল খেলেছে।”
হিসেব বলছে, এদিন মোট আর্জেন্টিনার মোট ১৫টা শট সেভ করেছেন ওয়াইস। আটকে দিয়েছেন প্রায় নিশ্চিত গোল। হতাশ ও বিরক্ত করে তুলেছিলেন মেসিকেও। এই দিনটিকে যে নিজের কেরিয়ারে স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখবেন তিনি, তা বলাই বাহুল্য। তবে ঐতিহাসিক জয়ের মধ্যেও তাঁর আক্ষেপ একটাই। তাঁর সঙ্গে ধাক্কা লাগার জন্য গুরুতর চোট পান তাঁর সতীর্থ ইয়াসের। যদিও আপাতত বিপদমুক্ত তিনি বলেই খবর।