shono
Advertisement

Breaking News

জানেন কেন কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের পাশে দাঁড়ায়নি আমেরিকা?

দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধ করছে দেখে হস্তক্ষেপ করবে আমেরিকা, ভেবেছিলেন মুশারফ।
Posted: 05:38 PM Jul 25, 2023Updated: 06:14 PM Jul 25, 2023

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কার্গিল যুদ্ধে (Kargil War) আমেরিকার (America) সাহায্য চেয়েছিল পাকিস্তান (Pakistan)। তৎকালীন পাক সেনাপ্রধান, পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মুশারফ (Pervez Musharraf) ভেবেছিলেন দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধ করছে দেখে হস্তক্ষেপ করবে আমেরিকা-সহ আন্তর্জাতিক মহল। তাতে লাভের ধন আসবে পাকিস্তানের ঘরে। কাশ্মীর ভূখণ্ডও চলে আসবে দখলে। যদিও সেগুড়ে বালি! ভারতীয় সেনার বীরত্বে হার মানে ইসলামাবাদের মদতপুষ্ট জঙ্গি এবং পাক সেনা। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই বিজয় ঘোষণা করে ভারত। প্রশ্ন হল, হাজার অনুরোধ-উপরোধেও পাকিস্তানের পাশে দাঁড়াল না কেন আমেরিকা?

Advertisement

১৯৯৯ সালের ১৩ মে থেকে ২৬ জুলাই, অর্থাৎ দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে চলে কার্গিল যুদ্ধ। পাকিস্তানের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী যুদ্ধে তাদের ৪০০ জন সেনা নিহত হন। আহতের সংখ্যা ৬৬৫। ৮ জন সেনা যুদ্ধবন্দি হন। অপরপক্ষে ভারতের ৫২৭ জন সেনা শহিদ হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন ১,৩৬৩ জন। যুদ্ধবন্দির সংখ্যা ৫। অথচ ওই বছরের শুরুতেই বহুদিন পরে ভারত-পাক সম্পর্ক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছিল। দিল্লি থেকে লাহোর পর্যন্ত ‘সদা-এ-সরহদ’ বাস পরিষেবা চালু হয়েছিল। ওয়াঘা-আট্টারি সীমান্ত দিয়েও চলাচল করত সেই বাস। এমনকী কার্গিল যুদ্ধের সময়েও চালু ছিল বাস পরিষেবা। ওই বাসে চেপে লাহোর গিয়েছিলেন তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী (Atal Bihari Vajpayee)। উদ্দেশ্য ছিল দুই দেশের মধ্যে শান্তিস্থাপন। সেই সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজ শরিফ (Nawaz Sharif)। যদিও তৎকালীন উচ্চাকাঙ্খী পাক সেনপ্রধান ভেস্তে দেন যাবতীয় শান্তি প্রক্রিয়া।

[আরও পড়ুন: কার্গিল যুদ্ধের অমর শহিদ ক্যাপ্টেন বাত্রা, আজও স্মরণীয় বিক্রম-গাথা]

পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, পূর্বতন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকেও কার্গিল আক্রমণের রূপরেখা দেখিয়েছিলেন মুশারফ। বেনজির তা খারিজ করে দেন। নওয়াজের ক্ষেত্রে সে রকম হয়নি। এর পরেই নিজেদের ক্ষমতা না মেপেই কার্গিলের পাহাড়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুশারফ। জঙ্গিদের ঢাল বানিয়ে তাঁর নেতৃত্বে যুদ্ধে নামে পাক সেনা। জম্মুৃ-কাশ্মীরের দ্রাস-কার্গিল সেক্টরে চলে লড়াই। পাকিস্তানের দিক থেকে নাগাড়ে অনুপ্রবেশ চলতে থাকে কার্গিলে। পাকিস্তান প্রথমে দাবি করেছিল, জঙ্গিরাই সব করছে। যদিও আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইফ অব ফায়ার’-এ মুশারফ স্বীকার করেন, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ছিল পাক সেনাও।

আসলে যুদ্ধে যে শেষ পর্যন্ত মুখ পুড়বে পাকিস্তানেরই এবং অতি দ্রুত, সেকথা ভাবতে পারেননি মুশারফ। তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ হাতের বাইরে যাওয়ার আগে শেষ চেষ্টা করেন পাক সেনাপ্রধান। আমেরিকার সাহায্য চান তিনি। কিন্তু তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন মধ্যস্থতায় রাজি হননি। আসলে ততদিনে আমেরিকা-সহ গোটা বিশ্বের কাছে পাক ষড়যন্ত্র জলের মতো পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল। এই কৃতিত্ব ভারতীয় কুটনীতিকদের। যার ফলে কার্গিলের ময়দানের মতোই আন্তর্জাতিক মঞ্চেও মুখ পুড়েছিল পাকিস্তানের।

[আরও পড়ুন: ২৪ বছর পূর্ণ কার্গিল বিজয় দিবসের, কেন কার্গিলে হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান?]

বাধ্য হয়ে ১৯৯৯ সালের ৪ জুলাই ভারত থেকে সেনা সরিয়ে নিতে রাজি হয় পাকিস্তান। যদিও ইউনাইটেড জিহাদ কাউন্সিলের সমর্থনে কিছু পাকিস্তানি সেনা ভারত থেকে সরতে রাজি হয়নি। তারা যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। অবশেষে ২৬ জুলাই হার মানে এই যোদ্ধারাও। যুদ্ধের সমাপ্তি হয়। বিজয় ঘোষণা করে ভারত। দেখতে দেখতে ২৪ বছর হয়ে গেল সেই ঐতিহাসিক জয়ের। উল্লেখ্য, কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানের লাভ না হলেও, উচ্চাকাঙ্খী তৎকালীন পাক সেনাপ্রধানের ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ হয়েছিল বটেই। পরবর্তীকালে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জেনারেল পারভেজ মুশারফ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement