ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: এ যেন খড়ের গাদায় সূচ খোঁজা! কেন্দ্র নির্দেশ দিয়েছিল কোভিড পজিটিভ হলেই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট কি না জানতে হবে। করতে হবে জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা। কিন্তু এমন বল্গাহীন সংক্রমণে কেন্দ্রের সেই নির্দেশ কতটা কার্যকর করা সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে কেন্দ্রের এমন নির্দেশ পৌঁছে যায় পশ্চিমবঙ্গ-সহ সব রাজ্যে। কিন্তু যে হারে সংক্রমণ শুরু হয়েছে, তাতে ওমিক্রন (Omicron) ভ্যারিয়েন্ট জানতে জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষার যৌক্তিকতা নিয়েই দ্বিধাবিভক্ত বিশেষজ্ঞ মহল। দ্বিতীয়ত, এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল, জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার জন্য যে কিট দরকার তার সরবরাহ কার্যত তলানিতে। তাই রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে পাঠানো নমুনার পাহাড় জমেছে কল্যাণীর জিনোম সিকোয়েন্স ল্যাবরেটরিতে। প্রায় সাতদিনের বেশি সময় পার হয়েছে, একটি নমুনারও উত্তর আসেনি। স্বাস্থ্যভবনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, “কেন্দ্র গাইডলাইন দিলেও কিট সরবরাহ যথেষ্ট নেই। তাই সব নমুনার পরীক্ষা হচ্ছে না। অন্তত এমনটাই জানা গিয়েছে।”
[আরও পড়ুন: তিন দিনে ১ কোটিরও বেশি ছোটদের টিকাকরণ, যুবদের টুইটে শুভেচ্ছা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর]
একধাপ এগিয়ে তিনি বলেছেন, “বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ হাজারের কিছু বেশি। সবার জিনোম সিকোয়েন্সিং পরীক্ষা করে রিপোর্ট পেতে অন্তত কয়েক লক্ষ টাকা দরকার। এত টাকা কে দেবে? দ্বিতীয়ত, ওমিক্রন বা ডেল্টা অথবা ডেল্টা প্লাস সব ক্ষেত্রেই চিকিৎসার কোনও পার্থক্য নেই। তবে রিপোর্ট পেতে দেরি হচ্ছে এটা ঘটনা।”
শুধুমাত্র বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদেরই ওমিক্রন পরীক্ষার জন্য নির্দিষ্ট করা হোক, এমন যুক্তি দিয়ে আইসিএমআরের (ICMR) কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে স্বাস্থ্যভবন। সূত্রের খবর, একটি জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষার জন্য খরচ হয় গড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা। সময় অন্তত চার থেকে পাঁচদিন। এই সময়ের মধ্যে রোগী কার্যত অনেকটাই সুস্থ হয়ে ওঠেন। অন্তত কেন্দ্র সরকারের নতুন গাইডলাইন প্রকাশের পর তা আরও স্পষ্ট। আইসিএমআরের একটি সূত্র বলছে, যেভাবে বল্গাহীন সংক্রমণ শুরু হয়েছে, তাতে মোট পজিটিভ বা আক্রান্তের অর্ধেক, ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত বলেই মনে হচ্ছে। তাই পজিটিভ হলেই জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা কতটা সম্ভব তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।