সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গুড ফ্রাইডে (Good Friday) ও ইস্টার সানডে- বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের জীবনের একটি বিশেষ পর্যায় এই দু’টি দিন। প্রতি বছর বসন্তকালে এই দু’টি দিন পালন করেন খ্রিস্টানরা। মানবজাতির পরিত্রাণের জন্য আত্মবলিদান দিয়েছিলেন যিশু খ্রিস্ট। গুড ফ্রাইডের একদিন পরেই মৃত্যুকে পরাজিত করে বেঁচে ওঠেন তিনি। তাঁর পুনরুত্থানের দিনটিকেই বলা হয় ইস্টার সানডে (Easter Sunday)। কিন্তু এই দুই দিনের তাৎপর্য কী? দেখে নেওয়া যাক।
খ্রিস্ট বিশ্বাসীরা মনে করেন, মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু হল মৃত্যু। এই মৃত্যুকে অস্ত্রের মতো ব্যবহার করেই মানুষকে পাপের পথে টেনে নিয়ে যায় শয়তান। এহেন সমস্যায় পিতা ঈশ্বর সিদ্ধান্ত নেন, মানুষকে উদ্ধার করতে হলে মৃত্যুকে বিনাশ করতে হবে। যদি মৃত্যুকে জয় করা যায়, তাহলেই শয়তানকেও শেষ করে দেওয়া যাবে। শয়তান যদি একবার হার মানে, তাহলেই মানবজাতি সমস্ত দুঃখ থেকে মুক্তি পাবে। তাই সাধারণ মানুষকে উদ্ধার করতে পরিকল্পনা শুরু করেন পিতা ঈশ্বর।
[আরও পড়ুন: গুড ফ্রাইডেতে পরতে হয় কালো পোশাক, এই বিশেষ দিনে আর কী কী নিয়ম মানতে হয়?]
বাইবেল অনুযায়ী, মানুষের পাপের প্রায়শিত্ত করতেই যিশুর জন্ম হয়। ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিল, একবারেই মানুষের সমস্ত পাপের মোচন করবেন তিনি। সেই জন্যই পৃথিবীতে পাঠান তাঁর একমাত্র পুত্র যিশুকে। এই একবার বলিদান দিলেই মানুষের সমস্ত পাপের ক্ষমা হবে, প্রায়শ্চিত্ত হবে সব অপরাধের- এমনটাই ভেবেছিলেন ঈশ্বর। পিতার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়েছিলেন তাঁর একমাত্র পুত্র যিশু। প্রবল যন্ত্রণার মধ্যেই নিজেকে মৃত্যুর কাছে সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। গুড ফ্রাইডের (Good Friday 2023) দিনে ক্রুশে মৃত্যুবরণ করেন যিশু।
এরপর গোটা একটা দিন কবরে শায়িত ছিলেন যিশু। শনিবার দিনরাত শয়তানের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁর আত্মা। তীব্র লড়াইয়ের শেষে পরাজিত হয় শয়তান। রবিবার সকালে কবর থেকে বেরিয়ে আসেন পুনরুত্থিত যিশু। দেখা দেন তাঁর শিষ্য় ও প্রিয়জনদের। খ্রিস্টানরা মনে করেন, যিশুর পুনরুত্থানেই প্রমাণিত হয়, শয়তান চিরকালের জন্য হেরে গিয়েছে। শারীরিক ভাবে মানুষের মৃত্যু হলেও, আত্মাকে শেষ করতে পারবে না শয়তান। এই বিজয়ের ঘটনাকে উদযাপন করতেই গুড ফ্রাইডের পরে পালিত হয় ইস্টার সানডে।