অর্ণব আইচ: DYFI নেতা মইদুল ইসলাম মিদ্দার মৃত্যুকে কেন্দ্র করে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। পুলিশের পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীকেও কাঠগড়ায় তুলছেন বামেরা। কারণ, তাঁদের দাবি পুলিশের অমানুষিক অত্যাচারের কারণেই এই পরিণতি তরতাজা মইনুলের। কিন্তু প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ মানতে নারাজ। পুলিশের দাবি, মৃতের দেহে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্নই নেই।
লালবাজার (Lalbazar) সূত্রে খবর, মৃত মইদুলের দেহে তেমন কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ কোনও অংশে আঘাতের চিহ্ন নেই। এক পায়ে ব্যান্ডেজ করা ছিল। পুলিশের দাবি, ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, মৃতের হাঁটুতে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দেহের ভিতরে কোনও আঘাত নেই। দেহের কিছু অংশ বিকল হওয়ার কারণেই মৃত্যু হয়েছে। হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল ও ভিসেরা পরীক্ষা হবে। সূত্রের খবর, মাংসপেশীতে আঘাতের ফলে অতিরিক্ত প্রোটিন ক্ষরণ হয়। সেই কারণেই ফুসফুসে জল জমে ও কিডনি খারাপ হয়ে যায়। তার ফলেই এই মৃত্যু কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সোমবার লালবাজারে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার জানান, আজ সকাল সাতটায় উড স্ট্রিটের নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় মইদুলের। তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় পুলিশ মর্গে। তিনজন চিকিৎসক ময়নাতদন্ত করেন। ময়নাতদন্তর ভিডিওগ্রাফিও হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় আসেন মইদুল। নবান্ন অভিযানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পুলিশের প্রশ্ন, মইনুল গত ১১ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত কোথায় ভরতি ছিলেন? শনিবার রাত দুটো নাগাদ তাঁকে উড স্ট্রিটের একটি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, ১১ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পার্ক স্ট্রিট এলাকার একটি ক্লিনিকে ভরতি ছিলেন ওই যুবক। প্রশ্ন, কেন মইদুল কোনও সরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হল না? কেন ওই ক্লিনিকের পক্ষ থেকেও পুলিশকে কিছু জানানো হল না। ইতিমধ্যেই লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরা এই ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছেন।
[আরও পড়ুন: ‘অল্প পয়সার চাকরিতে হবে না’, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ‘শর্ত’ রাখলেন মৃত DYFI নেতার স্ত্রী]
প্রাথমিকভাবে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, যে নার্সিংহোমে তাঁর মৃত্যু হয়েছে সেটি শেক্সপিয়ার সরণি থানার আওতায়। রবিবার দুপুর চারটে নাগাদ ওই নার্সিংহোম পুলিশকে জানায়, মইদুল নামে এক রোগী আঘাতজনিত কারণে ভরতি হয়েছেন। ওই মেডিক্যাল সার্টিফিকেট বা এমসি গোয়েন্দা পুলিশ খতিয়ে দেখছে। ক্লিনিক ও নার্সিংহোমের কর্তাদের জেরা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, মইদুলের প্রতিজ্ঞাপনে সোমবার কলকাতার পথে নেমেছে বাম ছাত্র-যুবরা। জেলায় জেলায় ধিক্কার মিছিল করা হয়েছে।