সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জ্ঞানবাপী মসজিদের (Gyanvapi Mosque) তহখানায় হিন্দুরা পুজো করতে পারবেন। সোমবার এই মর্মে রায় দিয়েছে এলাহাবাদ হাই কোর্ট (Allahabad High Court)। বারাণসী আদালতের পুজোয় অনুমোদনে আপত্তি করে উচ্চ আদালতে আবেদন করেছিল মসজিদ কর্তৃপক্ষ। সেই আপত্তি ধোপে টেকেনি। আদালত খারিজ করেছে মুসলিম পক্ষের পিটিশন। ঠিক কীসের ভিত্তিতে, কোন যুক্তিতে মসজিদের ভিতরে পুজোয় অনুমোদন দিল বারাণসী আদালতের পর এলাহাবাদ হাই কোর্টও?
সেকথা জানতে লম্বা ফ্ল্যাশব্যাকে যেতে হবে। তার আগে জেনে রাখা ভালো, তহখানা হল মসজিদের নিচের ভূগর্ভস্থ ঘর বা পাতালঘর। জ্ঞানবাপী মসজিদের নিচে এমন চারটি তহখানা রয়েছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ দিকের তহখানাটি ব্যাস পরিবারের মালিকানাধীন। তাই এই তহখানাটির নাম ‘ব্যাস কি তহখানা’। বারাণসীর আদালত হিন্দুপক্ষকে এই ‘ব্যাস কি তহখানা’তেই পুজো করার অনুমতি দিয়েছিল। এবার যাতে শিলমোহর দিল এলাহাবাদ হাই কোর্টও।
[আরও পড়ুন: ‘শাহজাহানের গ্রেপ্তারিতে বাধা নেই পুলিশের’, অভিষেকের দাবি উড়িয়ে সাফ জানাল হাই কোর্ট]
হিন্দু পক্ষের দাবি, এই ব্যাস কি তহখানায় দশকের পর দশক ধরেই পুজো হয়ে আসছিল। ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর বন্ধ করে প্রশাসন। মাত্রাছাড়া সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে কল্যাণ সিং সরকার পদত্যাগ করে। রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হয়। বছর খানিক বাদে ক্ষমতায় আস মুলায়ম সিং যাদবের সরকার। সেই সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার অজুহাতে ব্যাস কি তহখানা বন্ধই রাখা হয়। হাই কোর্টের আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ১৫৫১ সাল থেকে ওই তহখানা বা পাতালঘরের মালিকানা রয়েছে ব্যাস পরিবারের কাছে। আদালতে সেই তথ্য জমা দেওয়া হয়েছিল। তার ভিত্তিতেই বারাণসী আদালতের পুজোর অনুমতির সিদ্ধান্তকে বহাল রাখা হয়েছে।
[আরও পড়ুন: কার নির্দেশে সন্দেশখালির আন্দোলন? ‘ম্যাডাম’-এর নাম বলে রহস্য বাড়ালেন মহিলা]
উল্লেখ্য, ব্যাস কি তহখানায় পুজোর অনুমতি চেয়ে বারাণসীর আদালতে মামলা করেছিলেন শৈলন্দ্র পাঠক ব্যাস। শ্রী ব্যাসের দাবি, ব্রিটিশ আমল থেকে তাঁদের পরিবারের ওই তহখানায় পুজো হয়ে আসছে। এদিন উচ্চ আদালতের বিচারপতি বলেন, ১৯৯৩ সাল অবধি ব্যাস পরিবার পুজো করতেন। লিখিত কোনও আদেশ ছাড়াই বেআইনি পদক্ষেপে তা বন্ধ করেছিল তৎকালীন রাজ্য সরকার।
আদালত আরও জানায়, সংবিধানের ২৫ নং ধারায় ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। দীর্ঘদিন যাবৎ ব্যাস পরিবার তহখানায় ধর্মীয় উপাসনা করে আসছিল, মৌখিক নির্দেশে তাঁদের আটকানো যায় না। ২৫ নং ধারার অধীনে একটি নাগরিক অধিকারকে নির্বিচার পদক্ষেপে কেড়ে নেওয়া যায় না। যা হয়েছিল ব্যাস পরিবারের সঙ্গে।