গোবিন্দ রায়: এসএসসি (SSC) দুর্নীতি মামলা নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল গোটা রাজ্য। শিক্ষক নিয়োগের প্রায় প্রতিটি স্তরেই দুর্নীতির অভিযোগ স্পষ্ট হচ্ছে। প্রামাণ্য নথিও উঠে এসেছে কোথাও কোথাও। এই পরিস্থিতিতে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের কোন স্তরে কত পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া অসম্পূর্ণ, তার পূর্ণাঙ্গ তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। এই সংক্রান্ত মামলা যাঁর এজলাসে চলছে, সেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছিলেন। শুক্রবার তা আদালতে জমা পড়েছে। আর তা দেখে ফের ক্ষুব্ধ বিচারপতি। তাঁর প্রশ্ন, প্রাথমিক, মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে কোনও আইনি নিষেধাজ্ঞা নেই। তাহলে কেন নিয়োগ হচ্ছে না? আগামী ১৭ আগস্টের মধ্যে এ নিয়ে হলফনামা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি।
এর আগে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) অভিযোগ তুলেছেন, শিক্ষক পদে ১৮ হাজার চাকরি তৈরি। কিন্তু হাই কোর্টে মামলা চলছে বলে নিয়োগ করা যাচ্ছে না। চাকরিপ্রার্থীদের মামলা প্রত্যাহারের কথাও বলেছেন তিনি। তাঁর সেই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতেই বিচারপতি রাজ্য সরকারের কাছে এই তালিকা চেয়ে পাঠান। শুক্রবার তালিকা দিয়ে জানানো হয় –
- নবম-দশম শ্রেণিতে শূন্যপদের সংখ্যা ১৩৮৪২
- একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে শূন্যপদ ৫৫২৭
- প্রধান শিক্ষক পদে শূন্যপদের সংখ্যা ২৩২৫
- প্রাথমিকে শূন্যপদ ৩৯৩
স্কুল শিক্ষা দপ্তরের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আদালতের নির্দেশের কারণে নবম, দশম, একাদশ, দ্বাদশ এবং হেডমাস্টার পদে কোনও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ নেই। এরপরই বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এত শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও নিয়োগ হচ্ছে না কেন? তাঁর আরও মন্তব্য, রাজ্যের একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তি বিভিন্ন সময়ে বলছেন যে আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নিয়োগ করা যাচ্ছে না। এই ধরনের মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সচেতন থাকা প্রয়োজন। প্রাথমিকের ৩৯৩৬ শূন্যপদে আদালতের নিষেধাজ্ঞা নেই। কেন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে না, সেটা বোধগম্য নয়। কেন ৩৯৩৬ শূন্য পদে নিয়োগ শুরু হচ্ছে না, তা হলফনামা দিয়ে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের অধিকর্তাকে।
[আরও পড়ুন: দিল্লি যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রীর ডাকা নীতি আয়োগের বৈঠকে]
অন্যদিকে আরেকটি মামলায় মন্ত্রী পরেশ অধিকারীর কন্যা অঙ্কিতা অধিকারীর ফেরানো দ্বিতীয় কিস্তির টাকা শিক্ষিকা ববিতা সরকারকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। অঙ্কিতার ফেরত দেওয়া দ্বিতীয় কিস্তির ৭,৯৬,৪২১টাকা সুদ-সমেত পাবেন ববিতাদেবী। দু’সপ্তাহের মধ্যে টাকা দেওয়ার নির্দেশ। এই মুহূর্তে টাকা জমা রয়েছে হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে। এবার সেই টাকা চেক অথবা ড্রাফটের মাধ্যমে দেওয়া হবে ববিতাকে।